গালওয়ানে ইন্দো-চিন সীমান্ত ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শব্দ চয়ন নিয়ে রীতিমতো সতর্ক করলেন তাঁর পূর্বসূরী ডঃ মনমোহন সিং। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এদিন জানান, 'নিজের কথাকে চিনের হাতিয়ার করে দিচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।'
প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠিতে ডঃ মনমোহন সিং লিখেছেন, 'চিন নির্লজ্জ ও বেআইনিভাবে ভারতের ভূখণ্ড গালওয়ান, প্যাংগং টিএসও দাবি করছে। এর জন্য বেশ কয়েকবার গত এপ্রিল থেকেই আক্রমণ চালিয়েছে তারা। চিনের এই হুমকির কাছে ভয় পেয়ে আমাদের ভূখণ্ড নিয়ে আপোস করা উচিত নয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত কথাকে যাতে চিন হাতিয়ার করে নিজেদের সব অভিযোগ ঝেড়ে ফেলতে পারে সেদিকে লক্ষ রেখে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সংকট মোকাবিলায় সরকারের সব বিভাগের একযোগে কাজও নিশ্চিৎ করতে হবে।'
This is a moment where we must stand together as a nation and be united in our response to this brazen threat: Press Statement by Former PM Dr. Manmohan Singh pic.twitter.com/qP3hN3Od9D
— Congress (@INCIndia) June 22, 2020
চিনা হুমকি মোকাবিলায় জাতি ও দেশের সংঘবদ্ধ হওয়ার এটাই সেরা সময় বলে মনে করেন ভারতের দু'বারের প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং। তাঁর মতে, 'আমরা সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ভুল তথ্য কখনই কূটনীতি ও নির্ণায়ক নেতৃত্বের বিকল্প হতে পারে না। মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে কখনই সত্যকে চেপে রাখা যায় না। সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। সত্যকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। দেশের সুরক্ষা নিশ্চিৎ করতে গিয়ে নিহত কর্নেল বি সন্তোষ বাবু সহ মৃত সব সেনাকর্মীদের প্রতি যেন ন্যায্য বিচার হয়। তা না হলে দেশবাসীর আস্থা এবং বিশ্বাসের সঙ্গে ঐতিহাসিক প্রতারণা করা হবে।'
শুক্রবার লাদাখের গালওয়ানে চিনা আক্রমণ নিয়ে সর্বদল বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে দেশবাসীকে আস্বস্ত করে তিনি বলেছেন,‘ কেউ আমাদের সীমান্ত টপকে দেশে ঢুকতেও পারেনি। আমাদের কোনও সেনা পোস্ট দখল হয়ে যায়নি।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করে কংগ্রেস। শনিবারই সাংসদ রাহুল গান্ধী এনিয়ে প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন। টুইটে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের সেনা জওয়ানরা কেন নিহত হলেন? তাঁরা কোথায় শহিদ হলেন?’
পরে কেন্দ্র বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় জানায়, 'গত ১৫ জুন গালওয়ানে নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করতে মরিয়া ছিল চিনা সেনারা। নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনাদের কাঠামো তৈরি করতেও দেখা গিয়েছে। চিনা সেনাদের বিরত করার চেষ্টা করা হলেও তা তারা গ্রাহ্য করেনি। এর ফলেও ওইদিন ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।'
কেন্দ্রের ব্যাখ্যা উড়িয়ে কংগ্রেস মনে করছে চিনের হাতে ভারতের অংশ তুলে দিচ্ছেন মোদী। কার্যত আত্মসমর্পণ করছে নয়াদিল্লি। প্রধানমন্ত্রীকে রবিবার ‘সারেন্ডার মোদী’ বলেও কটাক্ষ করেন রাহুল গান্ধী।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন