পূর্ব লাদাখের গোগরা হট স্প্রিংস এলাকা থেকে ভারতীয় ও চীনা সেনারা প্রত্যাহার অব্যাহত রেখেছে। সোমবার, ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে জানান হয়েছে যে গোগড়া হটস্প্রিংস এলাকা থেকে ভারত ও চিন সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সোমবার এই অঞ্চলে দুদেশের তরফে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্তারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ওই অঞ্চল ঘুরে দেখেন।
সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন যে এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগবে, তবে সামনের সারির সেনারা ইতিমধ্যেই পিছু হটেছে। এ ছাড়া সেখানে নির্মিত অস্থায়ী সেনাছাউনিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ১৬ দফা সামরিক আলোচনার পর সেনা সরানোর প্রক্রিয়া চলছে। এই আলোচনায় সীমান্ত বিরোধ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে একমত হয়েছে দু’দেশই। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রের খবর উভয় পক্ষের তরফেই সোমবার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা ওই অঞ্চল ঘুরে দেখেন। ২০২০ সালের মে মাসের পর এই নিয়ে চতুর্থবার উভয় দেশই সীমান্ত এলাকা থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দু থেকে চার কিলোমিটার এলাকা বাফার জোন হতে পারে
ভারত ও চিন উভয়ই গত সপ্তাহে বলেছে যে তারা PP-15 থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করছে। এই স্থানের দু থেকে চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি করা হতে পারে বাফার জোন। তবে এ বিষয়ে এখনো কোন আনুষ্ঠানিক বিবৃতি মেলেনি। প্রথম থেকেই এই জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য চিনকে চাপে রেখেছিল ভারত। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বহুবার বলেছিলেন যে সীমান্তে শান্তি না থাকলে দুই দেশের সম্পর্ক আগের মতো স্বাভাবিক হতে পারে না।
আরও পড়ুন : < কোভিডে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু, ক্ষতিপূরণ ইস্যুতে কেন্দ্রকে তুলোধোনা সংসদীয় কমিটির >
১৬তম দফা আলোচনায় ঐকমত্য হয়েছে দু'দেশ
২০২০ সালের মে গালওয়ান উপত্যকার ঘটনার পর ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্ক একটি জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছে। সীমান্তে উভয় দেশেই বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করে। পরিস্থিতি রীতিমত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ সত্ত্বেও দু’দেশের কূটনৈতিক সামরিক পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত থাকে। যার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠ ফলাফলও বেরিয়ে আসে। দুই দেশের মধ্যে ১৬ দফা আলোচনায়, পূর্ব লাদাখের সীমান্ত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সম্মত হয় ভারত-চিন দু’দেশই।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উজবেকিস্তানের সমরখন্দে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ১৪ সেপ্টেম্বর সমরখন্দ পৌঁছাবেন। সেখানে ১৫ এবং ১৬ সেপ্টেম্বর এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সম্মেলন শেষে ওই দিনই দেশে ফেরার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। উজবেকিস্তানের সমরখন্দে দুই দিনব্যাপী এই শীর্ষ সম্মেলনে সব সদস্য দেশের রাষ্ট্র নায়করা যোগ দেবেন। চিন, পাকিস্তান, রাশিয়া, ভারত, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান এবং কাজাখস্তান SCO-এর পূর্ণ সদস্য। গালওয়ান সংঘর্ষের পর সাংহাই কর্পোরেশন অর্গনাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনে মুখোমুখি হতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর আগে ২০১৭ সালের ৭ জুলাই জি-২০ সম্মেলনের মাঝে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন মোদী জিনপিং। সেবারে ডোকলাম সংঘাত মিটিয়ে নিয়েছিলেন দুই নেতা।