পূর্ব লাদাখের গোগরা পোস্টের পেট্রল পয়েন্ট পিপি ১৭-এ থেকে সেনা সরালো ভারত ও চিন। ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, গত ৪ ও ৫ অগাস্ট ভারত ও চিন লাদাখের পশ্চিম প্রান্তের সেনা ছাউনি এবং ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ করেছে। সীমান্ত বিরোধী মেটাতে উভয় দেশের সেনা কমান্ডার পর্য়ায়ে আলোচনা চলছে। সেই প্রেক্ষিতেই সেনা সরানোর বিষয়টিকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসাবেই ধরা হচ্ছে।
ভারতীয় সেনার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "গোগরা পোস্টের পিপি ১৭-এ পয়েন্ট থেকে সব অস্থায়ী কাঠামো ও অন্যান্য জিনিসপত্র সরানো হয়েছে। দুই দেশের বাহিনীই তা খতিয়ে দেখেছে। এই অঞ্চলকে সংঘর্ষের আগে অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ায় সহমকত দুই দেশের সেনা।" এছাড়াও উল্লেখ রয়েছে যে, দুই দেশের সেনাই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে মান্য দেবে ও একতরফা ভাবে কেউ তার বদল ঘটাবে না।
গত ৩১ জুলাই চুশুল মল্ডোয় ভারত ও চিনা সেনার মধ্যে দ্বাদশবার কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়। দীর্ঘ প্রায় ১০-১১ ঘণ্টা ধরে সেই ম্যারাথন বৈঠক চলেছিল। এই বৈঠকে পূর্ব লাদাখ থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয় আলোচনা হয়। দুই দেশের সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে সেনা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত সহমত হয় ভারত-চিন।
এর আগে, সরকারি এক আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছিল যে, চিন পিপি ১৭-এ থেকে সেনা সরাতে রাজি, কিন্তু পিপি ১৫ বা হট স্প্রিং এলাকা থেকে লাল-ফৌজ প্রত্যাহারে বেজিং আগ্রহ দেখায়নি।
গত সোমবার ভারত-চিন যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, "সীমান্ত অঞ্চলের পশ্চিম দিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পাশে বিরোধ রয়েছে এমনসব অঞ্চলের সমাধান সম্পর্কে স্পষ্ট এবং গভীরভাবে মতবিনিময় হয়েছে দুই দেশের। দ্বাদশ পর্যায়ের আলোচনা ইতিবাচক ও আস্থাবর্ধক। ভারত ও চিন পারস্পরিক চুক্তি এবং বিধি অনুসারে অবশিষ্ট ভিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে আগাহী। এর জন্য আলোচনাও বজায় থাকবে।"
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ঘিরে ভারত-চিন টানাপোড়েন লেগেই থাকে। দীর্ঘ আলোচনার পর চলতি বছরের শুরুতে প্যাংগ্যং হ্রদ অঞ্চল থেকে লাল-ফৌজ পিছু হটলেও গোগরা, হট স্প্রিং, দেপস্যাং-সহ একাধিক সংঘর্ষস্থলে চিনা সেনার উপস্থিতি ছিল। সেনা সরানোর বিষয়টি দুই দেশের মধ্যে গত দেড় বছরে একাদশবার কমান্ডার বৈঠকেও মেটেনি। তবে এবার ধীরে ধীরে হয়তো সেই বরফ গলছে। গোগরার পিপি ১৭-এ থেকে দুই দেশের সেনা প্রত্যাহার হয়তো তারই ইঙ্গিত।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন