আট সপ্তাহেরও বেশি সময় নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত ও চিনের সেনা। সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত। পরিস্থিতি বদলে দুই দেশের সেনা ও কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনাতেই ফল মেলেনি। তাই উত্তেজনা প্রশমণে এবার বিশেষ প্রতিনিধির মাধ্যমে বেজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী সাউথ ব্লক। এক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালেই আস্থাশীল মোদী সরকার।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল কথা বলতে পারেন চিনের স্টেট কাউন্সিলর তথা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-য়ের সঙ্গে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে আলোচনার মূল বিষয়বস্তুই হবে নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে বাড়তি সেনা প্রত্যাহার ও উত্তেজনা প্রশমণ।
নিয়ন্ত্রণরেখা সংকট নিয়ে গত মঙ্গলবারই ভারত-চিন সেনা কমান্ডার পর্যায়ে আলোচনা হয়েছিল। জানা যায়, নিয়ন্ত্রণরেখা রেখা থেকে দুই দেশই সেনা সরাতে সম্মত হয়েছে। নির্মাণও ভেঙে ফেলা হবে। বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেনা বিভিন্ন পয়েন্টে যেতে পারবে। এর পাঁচ দিনের মাথায় বিশেষ প্রতিনিধির মাধ্যমে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে উত্তেজনা প্রশমণের ইঙ্গিত দিতে চাইছে ভারত।
সেনার এক আধিকারিকের কথায়, 'রিপোর্ট এলে পুরো বিষয়টি জানা যাবে। তবে গত তিন ধরে গালওয়ান থেকে অন্তত সেনা সরেছে ও নির্মাণ ধ্বংস করা হয়েছে। আন্তর্জাতিকস্তরে কিছু হলে তা জানি না। তবে, প্রকৃতি বিরূপ, গালওয়ান নদীর জল বাড়ছে। তাই জন্যও এই প্রক্রিয়া কিছুটা দেরি হতে পারে।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, 'বাস্তবে কি হচ্ছে তা দেখার জন্য ১০ দিন ধার্য হয়েছে। তবে, গালওয়ানে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গালওয়ানই আমাদের প্রধান বিবেচনার বিষয়।' প্যাংগং টিএসও, ফিঙ্গার-৪ থেকে ফিঙ্গার-৮- চিনা সেনার অস্তিত্ব যেখানে নজরে এসেছে, সেখান লাল ফৌজ এখনও অবস্থান করছে। দেবসাংয়ের ক্ষেত্রেও উদ্বেগ বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে, উচ্চস্তরে সীমান্ত আলোচনা চালাতে আগ্রহী নয়াদিল্লি। ভারতে বিদেশমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদ ক্যাবিনেট মন্ত্রী পদমর্য়াদার হলেও চিনে তা নয়। চিনের প্রেক্ষিতে বিদেশমন্ত্রীর থেকেও বেশি ক্ষমতাধারী স্টেট কাউন্সিলর। ২০১৮ পর্যন্ত চিনে বিদেশমন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর পৃথক ব্যক্তি থাকলেও বর্তমানে তা নয়। ডোকালাম সংকট মেটাতে ২০১৭ সালে চিনা স্টেট ইয়াং জিয়াছির সঙ্গে আলোচনা চলেছিল। জিয়াছি ছিলেন সেদেশের বিশেষ প্রতিনিধি। বর্তমানে চিনা স্টেট কাউন্সিলর তথা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই- একই ব্যক্তি। ফলে আলোচনা কতটা ফলপ্রসূ হবে চা নিয়ে কিছুটা চিন্তায় সাউথ ব্লক। তবে দোভালের নেতৃত্বেই বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনায় জোর দিচ্ছে মোদী সরকার।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষবার ভারত-চিন বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা হয়েছিল। সেখানে নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য পারস্পরিক আস্থা বর্ধনে সম্মত হয় দুই দেশ।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন