তাদের যাত্রী পরিষেবা আগামী ৩ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকলেও একাধিক রুটে বিশেষ এক শ্রেণীর যাত্রীর জন্য ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় রেল। সম্ভবত চলতি মাসেই বেঙ্গালুরু থেকে এইসব ট্রেনে চেপে নিজেদের কর্মস্থানে যাবেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রায় ১,২০০ অফিসার এবং জওয়ান। দেশব্যাপী ২১ দিনের লকডাউনের ফলে আটকে পড়েছিলেন তাঁরা, এবং তাঁদের যাতায়াতের আর কোনও পন্থা খুঁজে বের করা যায় নি।
দেশজুড়ে জনসাধারণের গতিবিধি রুখতে সমস্ত ট্রেন বাতিল হয়ে যাওয়াতে এই বিশেষ ট্রেনগুলি চালাতে অনুমোদনের প্রয়োজন হয় তিনটি মন্ত্রকের কাছ থেকে - প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র, এবং রেল।
সূত্রের খবর, "যে সময় লকডাউন ঘোষিত হয়, সে সময় এইসব অফিসাররা বেঙ্গালুরু, বেলগাম এবং সেকেন্দ্রাবাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন, যেগুলি সবই সাদার্ন কম্যান্ড-এর অধীনে।" প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০০ থেকে ৫০০ অফিসার এবং জওয়ান রয়েছেন, যাঁদের প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হয়েছে।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, আপাতত দুটি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ধরে এসি-বিহীন ট্রেনে যাতায়াত করবেন সেনাবাহিনীর অফিসার-জওয়ানরা। এই রুট দুটি হলো গুয়াহাটি এবং জম্মু তাউই। সেনাবাহিনীর এক সূত্র জানিয়েছে, এই ট্রেনগুলি "উত্তর এবং পূর্ব সীমান্তের প্রয়োজন মেটাতে" চালানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে দুটি 'সেনাবাহিনী স্পেশাল' ট্রেন চলবে। একটি যাবে ১৭ এপ্রিল, বেঙ্গালুরু, বেলগাম এবং সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশন হয়ে আম্বালা এবং জম্মু, এবং অন্যটি ১৮ এপ্রিল হাওড়া স্টেশন হয়ে গুয়াহাটি যাবে।
ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, "শুধুমাত্র উত্তর এবং পূর্ব সীমান্তে মোতায়েন ইউনিটে যোগ দিতে যাচ্ছেন যাঁরা, এবং যাঁদের যথাবিহিত কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে এবং ফিটনেস পরীক্ষা হয়েছে, তাঁরাই এই ট্রেনে জায়গা পাবেন।"
তবে স্বাভাবিক ট্রেনের মতো গন্তব্যে পৌঁছতে যথাসম্ভব স্বল্প দৈর্ঘ্যের রুট ধরবে না এই বিশেষ ট্রেনগুলি। একাধিক স্টেশনে দীর্ঘ সময় থামবেও তারা। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে বিশেষ 'প্যান্ট্রি কার', অর্থাৎ খাবারের বন্দোবস্ত। ট্রেনগুলির কামরা যৌথভাবে জীবাণু-মুক্ত করবে ভারতীয় রেল এবং সেনাবাহিনী। সামাজিক দূরত্ব-বিধি মাথায় রেখে প্রতিটি এসি-বিহীন কোচে সফর করবেন ৪০ জন জওয়ান, যেখানে সাধারণভাবে একেকটি কোচে ৭২ জন যাত্রীর সংস্থান থাকে।
উত্তর ভারতে সম্ভাব্য রুট হতে পারে বেলা, আগ্রা, ঝাঁসি, এবং দিল্লি হয়ে, এবং উত্তরপূর্বের সম্ভাব্য রুট যাবে বিজয়ওয়াড়া, হাওড়া, এবং কাটিহার হয়ে। তবে এখনও রুট চূড়ান্ত হয়নি বলে সেনাবাহিনী সূত্রে খবর।
সূত্রের আরও খবর, এখন পর্যন্ত এটি একটি "এককালীন ব্যবস্থা", যদিও পরিবহণের প্রয়োজন সম্পূর্ণ মেটাতে বেশ কিছুদিন লাগবে। বর্তমানে সেনাবাহিনীর তরফে "রেল মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা চলছে যাতে আগামী সপ্তাহগুলিতে অতিরিক্ত কিছু ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায়"।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন