মৃত্যু রোখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১০,১৫৮ জন। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০হাজার ১৫৮ জন। সেই সঙ্গে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৪,৯৯৮। হুহু করে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ সপ্তাহে ৩হাজারের বেশি আক্রান্তের সংখ্যা কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। আজ বৃহস্পতিবার একদিনে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে দশ হাজারের বেশি। দৈনিক পজিটিভিটি রেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৪২ শতাংশ
দেশে করোনা বাড়ছে। সেই কথা মাথায় রেখে করোনা-১৯ ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড উৎপাদন পুনরায় শুরু করল সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক আদর পুনাওয়ালা বুধবারএমনটাই জানিয়েছেন। পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, তাঁর কোম্পানির কাছে ইতিমধ্যে ৬০ লক্ষ কোভোভ্যাক্স ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ আছে। বয়স্কদের অবশ্যই বুস্টার ডোজ নেওয়া উচিত। এর সঙ্গে পুনাওয়ালা আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা আগাম সতর্কতা হিসেবেই কোভিশিল্ড উৎপাদনও শুরু করে দিলাম। যাতে কারও প্রয়োজন হলে, তিনি নিতে পারেন।’
পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, তাঁর সংস্থা তিন মাসের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ কোভিশিল্ড তৈরি করে ফেলবে। এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চাহিদা অনুযায়ী, সময়ের মধ্যেই কোভিশিল্ড জোগান দেওয়া সম্ভব হবে বলেই পুনাওয়ালা জানিয়েছেন। এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কোভিশিল্ড উৎপাদন বন্ধ করেছিল সিরাম। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রক বুধবার জানিয়েছে, দেশে একদিনে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭,৮৩০। যা গত ২২৩ দিনে সর্বোচ্চ। আর আজ ১৩ই এপ্রিল সংক্রমণ ছাড়াল দশ হাজারের গণ্ডি।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে ওমিক্রন XBB.1.16 ভেরিয়েন্ট। ক্রমশ মিউটেশনের মাধ্যমে নিজেকে আরও বেশি সংক্রামক করে তুলছে ওমিক্রনের এই ভেরিয়েন্ট। ভারতে এখনও পর্যন্ত নয়া এই ভেরিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৩। যার মধ্যে সিংহভাগই গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে রেকর্ড করা হয়েছে। গত ১৫ মাসে ভারতে ওমিক্রনের চারশো নতুন সাব-ভেরিয়েন্টকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে, সমস্ত ভেরিয়েন্টের ৯০ শতাংশ হল XBB৷ XBB.1.16।
XBB.1.16 ভেরিয়েন্টটি এখন পর্যন্ত ভারতে মোট কোভিড সংক্রমণের ৩৮.২ শতাংশ সংক্রমণের জন্য দায়ি। XBB.1.16-ভেরিয়েন্টে আক্রান্তের লক্ষণগুলি মোটামুটি একই। জ্বর, কাশি, সর্দি, সর্দি, মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা, কখনও কখনও পেটে ব্যথা এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ লক্ষিত হচ্ছে এই ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হলে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীরা বাড়িতেই সুস্থ হয়ে ওঠেন তবে কারুর যদি অন্য কোন শারীরিক সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে রোগীকে অনেকসময় হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে। দেশে আবার মাথা চাড়া দিচ্ছে করোনা সংক্রমণ। তবে এবারে নয়া রূপে। সংক্রমণের হার বাড়ছে তরতরিয়ে। কারণটা আর কিছুই না। বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই নয়া স্ট্রেন সহজেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই স্ট্রেনটি ওমিক্রনের দুটি রিকম্বিন্যান্ট স্ট্রেনের সংমিশ্রন। এটি হাইব্রিড প্রজাতির ভাইরাস। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে গতকালের আজ অনেকটাই বেড়েছে সংক্রমণ। এদিকে বাড়তে থাকা সংক্রমণের মাঝে শনিবার কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক এবং অনান্য রোগে আক্রান্তদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করেছে। তিনি রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের পর এই নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, কোভিডে মৃতের মধ্যে বেশিরভাগই ৬০ উর্ধ্ব। তাই তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার দরকার।