Advertisment

ভারতীয় সেনা অপসারণে চিনের বিশেষ ফায়দা? মালদ্বীপের সিদ্ধান্তে কী অবস্থান বিদেশমন্ত্রকের?

দেশ থেকে বিদেশী সেনা প্রত্যাহার মালদ্বীপ নির্বাচনে মহম্মদ মুইজ্জুর অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Maldives President, Maldives President indian military, indian military maldives, Maldives latest news, Mohamed Muizzu, Mohamed Muizzu Indian military, Mohamed Muizzu maldives, indian express news"

ভারতীয় সেনা অপসারণে চিনের বিশেষ ফায়দা? মালদ্বীপের সিদ্ধান্তে কী অবস্থান বিদেশমন্ত্রকের

শনিবারই মলদ্বীপের নয়া নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। মলদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিনি দেখা করলে, সেই সময়ই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলেন মহম্মদ মুইজ্জু।

Advertisment

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে, শনিবার (১৮ নভেম্বর) মহম্মদ মুইজ্জু তার দেশ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছেন। মলদ্বীপে অর্থনৈতিক জোনে নজরদারির জন্য ৭০ জন ভারতীয় সেনা মোতায়েন রয়েছেন। নজরদারির জন্য উপস্থিত রয়েছে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজও। নজরদারির পাশাপাশি মেডিক্যাল ইমার্জেন্সিতে উদ্ধারকাজে উড়ান পরিচালন ও মাদক পাচার রোখার কাজও করে মলদ্বীপে মোতায়েন ভারতীয় সেনারা।

এদিকে, মালদ্বীপের এই সিদ্ধান্তের ফলে বেজিং সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চায়। এমনবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সরিয়ে দিতে বলার পদক্ষেপে চিনের কাছ থেকে মালদ্বীপ কী সুবিধা নেবে এবং ড্রাগনের দেশ কি এমন সুযোগ ছাড়বে? রিপোর্ট অনুযায়ী, মালদ্বীপ চিনা বিনিয়োগকারীদের হোটেল এবং রিসোর্ট, ইকো-ট্যুরিজম এবং ভ্রমণ সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগের আরও সুযোগ দেবে। পাশাপাশি মৎস্য, কৃষি, রিয়েল এস্টেট, পরিবহন ও লজিস্টিকসের মত বিদেশি বিনিয়োগের জন্য পথ খুলে দেবে।

চিনা কাস্টমস তথ্য অনুযায়ী, মালদ্বীপে চিনের রপ্তানি ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ৫৯ শতাংশ বেড়েছে। এবিষয়ে অধ্যাপক আলেকজান্ডার উউইং বলেছেন, "মালদ্বীপ চিন ও ভারতের মধ্যে কৌশলগত প্রতিযোগিতার কেন্দ্রস্থল ।" তিনি বলেন, "চিন দীর্ঘদিন ধরে এই মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করছে এবং এখন নির্বাচনের পরে খোলা এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করার সময় এসেছে চিনের।"

ভারতীয় সেনা প্রসঙ্গে মুইজ্জু কী বলেছিলেন?

সংবাদ সংস্থা পিটিআই- সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে মুইজ্জু বলেছেন যে মালদ্বীপের জনগনের ইচ্ছাপূরণের জন্য প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু নয়াদিল্লির কাছে এই অনুরোধ করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এবং মুইজ্জুর মধ্যে বৈঠকের সময় মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ভারতের কাছে এই অনুরোধ করেছিলেন।

শপথ নেওয়ার একদিন পর, মালদ্বীপের নতুন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু ভারত সরকারের কাছে সেনা প্রত্যাহারের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু মালদ্বীপের নাগরিকদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদানে ভারতীয় বিমানের অবদানের কথা স্বীকার করেছেন। তারাও একমত যে আন্তর্জাতিক পর্যটকরা দুর্গম দ্বীপে থাকে। তিনি মাদক চোরাচালান পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধে তাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক মুখপাত্র, অরিন্দম বাগচি, গত মাসে ১৮ অক্টোবর মালদ্বীপের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় বলেছিলেন যে ‘গত পাঁচ বছরে, আমাদের কর্মীরা ৫০০ জনেরও বেশি লোককে মেডিকেল ইমার্জেন্সিতে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। যার কারণে মালদ্বীপের ৫২৩ জনের প্রাণরক্ষা সম্ভব হয়েছে। সাম্প্রতিক কোভিড মহামারী সহ যে কোনও বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে ভারত মালদ্বীপকে প্রথম সাহায্য করেছে’।

মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারত-বিরোধী তোলপাড় শুরু করেছেন। শপথ গ্রহণের পরপরই, শনিবার মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি কার্যালয় ঘোষণা করেছে যে তার সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে দেশ থেকে তার সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহার করতে বলেছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে এই বিষয়ে কার্যকর সমাধান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ঘোষণায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর সঙ্গে দেখা করার সময় মুইজ্জু আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুরোধ করেছিলেন। মালদ্বীপে ভারতের প্রায় ৭০ জন সেনা রয়েছেন।

সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু মালদ্বীপের সাধারণ নাগরিকদের চিকিৎসায় এই ভারতীয় বাহিনী ও বিমানের অবদানের কথা স্বীকার করেছেন। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু যখন মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর কাছে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি উত্থাপন করেন। ঠিক একই সময়ে ভারতের একটি ডর্নিয়ার বিমান মালদ্বীপের এক নাগরিকের জীবন বাঁচিয়েছে। মালদ্বীপের সেনাবাহিনী নিজেই এই ঘটনার তথ্য দিয়েছে।

মালদ্বীপ নির্বাচনে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার একটি বড় ইস্যু

দেশ থেকে বিদেশী সেনা প্রত্যাহার মালদ্বীপ নির্বাচনে মহম্মদ মুইজ্জুর অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল। শুক্রবার শপথ নেওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে তিনি তা করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। ভারতের নাম না করে মুইজ্জু বলেন, "মালদ্বীপে কোন বিদেশি সামরিক কর্মী থাকবে না।"

India china Maldives
Advertisment