Covid 19 in India: ইউরোপে ফিরেছে করোনা আতঙ্ক। দৈনিক সংক্রমণ উদ্বেগে রেখেছে রাশিয়া, জার্মানির মতো দেশগুলোকে। এই পরিবেশ ফিরতে পারে ভারতেও। সম্প্রতি এমন দাবি করেছে প্রজেক্ট: জীবন রক্ষা নামে এক সংস্থা। পিপিপি আওতাভুক্ত এই সংস্থা গত দেড় বছর ধরেই সংক্রমণ মোকাবিলার উপর কাজ করছে। তাদের সাম্প্রতিক সমীক্ষা এদেশে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এই সমীক্ষার এক কর্তা মাইশুরু সঞ্জীব বলেছেন, ‘কোভিড চিকিৎসার জন্য বিমার অর্থ দাবির সংখ্যা অক্টোবরে অনেক কমেছে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় প্রায় ৭২% কমেছে বিমা দাবি বা ইন্স্যুরেন্স ক্লেইম। সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী প্রায় ১ লক্ষ ৫৫ হাজার করোনা চিকিৎসার জন্য বিমা অর্থ দাবি করছিলেন। অক্টোবরে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজারে। অর্থাৎ অক্টোবর মাসজুড়ে ছিল উৎসবের মরশুম। একাধিক রাজ্য শিথিল করেছিল করোনা বিধি। তারপরেও করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাধীন হওয়ার সংখ্যা কমেছিল।‘
তবে শুধু আক্রান্তদের জন্য বিমার টাকা দাবি নয়, করোনায় মৃতদের পরিবারের তরফে বিমার টাকা দাবির সংখ্যাও অক্টোবরে কমেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান মাইশুরু সঞ্জীব। পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে ৬০% কমেছে কোভিড মৃতদের পরিবারের তরফে অর্থ দাবির পরিমাণ। সেপ্টেম্বরে প্রায় ৪০৮৪টি পরিবার এই অর্থ দাবি করেছিল। অক্টোবরে করেছেন মাত্র ১৬৮৮ জন। অর্থাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে মৃতের সংখ্যা গত দুই মাসে স্বস্তিজনক ভাবে কমেছে।‘
প্রদীপের তলায় অন্ধকারের মতোই সংস্থার ইঙ্গিত, ’১১ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ এদেশে নতুন করে আক্রান্ত হবেন। বিশ্বজুড়ে আক্রান্তদের হিসেবে যা ২.৩%।‘ এদিকে,করোনার ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ। মানে, ভ্যাকসিন দেওয়ার পর, ধীরে ধীরে তার কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে, কোভিডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ-শক্তিকে চাঙ্গা রাখতেই এই বুস্টার ভ্যাকসিনের আবির্ভাব। বিজ্ঞানীদের বড় অংশই বুস্টার ডোজের পক্ষে। যদিও ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজেশন বলছে, এতে ভ্যাকসিন-বৈষম্য চড়ায় উঠতে পারে আরও। এ দেশে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ দেওয়া হচ্ছে, জোরদার চলছে সে কাজ। কিন্তু এর পর বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে কি? সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি এখনও। আমেরিকায় এ ব্যাপারে ঢংঢং ঘণ্টা পড়ে গিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার্স অফ ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (CDC)-র ডিরেক্টর রোসেল ওয়ালেনস্কি জানিয়ে দিয়েছেন, যাঁদের বয়স ১৮ কিংবা তার বেশি, তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার অন্তত ৬ মাস পর পেতে পারবেন বুস্টার-বল। এখনও পর্যন্ত ৪৭ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিনি ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তবে শীতকালের ভয় পাচ্ছে তারা। কোভিডের ঘুড়ি সাঁই সাঁই করে উড়তে শুরু না করে দেয়! ওয়ালেনস্কি বুস্টার ডোজ নিয়ে বলেছেন, ‘শীতকালীন ছুটির মরসুম শুরু হতে চলেছে, ফলে কোভিডে সুরক্ষা-বৃদ্ধি অত্যন্ত প্রয়োজন এখন। বুস্টার ডোজ সেই কাজটিই করবে। ১৮ বছরের গন্ডি পেরনো-রা বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন।’ এর আগে সে দেশে শুধুমাত্র জনসন অ্যান্ড জনসনসের প্রতিষেধক (এক ডোজের ভ্যাকসিন) নেওয়ার ক্ষেত্রেই ছাড়পত্র ছিল বুস্টারের। দু’মাস পর নিতে হত এই ভ্যাকসিনের ডোজ।
বুস্টার ডোজে ভারতের ভাবনা?
ভারতে বুস্টার ডোজ নিয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট তথ্য সামনে আসেনি। ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা সহ বেশ কিছু ফ্যাক্টর বিচার করতে হবে আমাদের দেশকে, বুস্টার ডোজ চালুর আগে। বিচার করতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ভ্যাকসিনের সাপ্লাই বিষয়েও। ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মযজ্ঞটি শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের ১১৫ কোটি ডোজ দেওয়া হয়েছে এ দেশে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন