মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ হিসেবে ভারতকে চিহ্নিত করা হল। যৌন হিংসা এবং দাসশ্রমিক হিসেবে কাজ করানোর ঝুঁকিই এ দেশকে এই লজ্জাকর অবস্থানে নিয়ে গেছে। মঙ্গলবার বিশ্বের সাড়ে পাঁচশো বিশেষজ্ঞের দেওয়া ভোটের ফলাফলে দেশের এই পরিস্থিতির কথা সারা পৃথিবীর সামনে প্রকাশিত হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান এবং সিরিয়া যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। চার এবং পাঁচ নম্বরে রয়েছে সোমালিয়া ও সৌদি আরব। প্রথম দশে যে একমাত্র পশ্চিমি দেশের ঠাঁই হয়েছে, তার নাম আমেরিকা। ২০১১ সালেও এরকমই এক ভোটে বিশেষজ্ঞরা দেখেছিলেন আফগানিস্তান, কঙ্গো, পাকিস্তান, ভারত এবং সোমালিয়া মহিলাদের পক্ষে সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্র।বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লিতে বাসের মধ্যে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত মেয়েদের ওপর যৌন হিংসার ঘটনা প্রতিরোধে জাতীয় স্তরে তেমন কোন ভূমিকা নেয়নি ভারত।
কর্নাটক সরকারের আধিকারিক মঞ্জনাথ গঙ্গাধরের মতে, ধর্ষণ, বৈবাহিক ধর্ষণ, যৌন হিংসা, কন্যাভ্রূণ হত্যা - এইসব বিষয়ই উপেক্ষিত থেকে গেছে। "বিশ্বের অর্থনীতিতে সর্বাপেক্ষা দ্রুত উন্নয়নশীল, মহাকাশ ও প্রযুক্তিতে নেতৃত্বদায়ী এ দেশ মহিলাদের উপর হিংসার ক্ষেত্রে লজ্জাজনক ভূমিকা রেখেছে।"
সরকারি তথ্য অনুসারে মহিলাদের উপর হিংসার ঘটনা ২০০৭ থেকে ২০১৬-র মধ্যে ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন দেশে প্রতি ঘণ্টায় চারজন মহিলার ধর্ষণের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়।
এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাষ্ট্রসংঘের সদস্য ১৯৩টি দেশের মধ্যে কোন দেশকে তাঁরা মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে মনে করেন। উত্তরদাতারা জানিয়েছেন, মানব পাচার, যৌনদাসত্ব, বলপূর্বক বিবাহ এবং কন্যাভ্রূণ হত্যার মতো বিষয়েও ভারত পৃথিবীর অন্যতম বিপজ্জনক দেশ। এই সমীক্ষা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে দেশের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রক।