গত অক্টোবরে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মত ইজরায়েলকে নিশানা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শনিবার তিনি এক ভাষণে বলেন, 'যুদ্ধে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর বিষয়ে ইজরায়েলের আগে থেকেই সচেতন হওয়া উচিত ছিল'। পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন, 'আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার দায় বর্তায় ইজরায়েলের উপরও। কোন ভাবেই ইজরায়েল সেই আইন লঙ্ঘন করতে পারে না'।
ইজরায়েলের সেনাবাহিনী দক্ষিণ গাজার রাফাতে হামাসের বিরুদ্ধে স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর আগে বিশ্বের অনেক রাজনীতিবিদ ইজরায়েলের সমালোচনায় মুখ খুলেছেন। এদিকে, বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবার প্যালেস্তাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন।
মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং জার্মান বিদেশমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের উপস্থিতিতে মিউনিখে একটি নিরাপত্তা সম্মেলনে আলোচনার সময় জয়শঙ্কর এই মন্তব্য করেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামাসের হামলাকে 'সন্ত্রাস' হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, 'ইজরায়েলের মানবিক আইন মেনে চলার জন্য আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে'।
জয়শঙ্কর আরও বলেন, যুদ্ধে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর বিষয়ে ইজরায়েলকে আগে থেকে খুব সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, আগে- আমাদের পরিষ্কার হওয়া উচিত যে ৭ অক্টোবর যা ঘটেছে তা সন্ত্রাসবাদ। এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। । দ্বিতীয়ত, ইসরায়েল যেভাবে প্রতিশোধ নিচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারে খুবই সতর্ক হওয়া উচিত ছিল ইজরায়েলের। । আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেদেশেরও। তৃতীয়ত,বন্দিদের মুক্তি দেওয়াটা জরুরি। চতুর্থত, ত্রাণ সরবরাহের জন্য একটি মানবিক করিডোর এবং একটি স্থায়ী মানবিক করিডোর প্রয়োজন।
প্যালেস্তাইন ইস্যুতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে জয়শঙ্কর বলেন, 'ভারত দীর্ঘদিন ধরে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে বিশ্বাস করে। আমরা বহু দশক ধরে সেই অবস্থান বজায় রেখেছি এবং আমি মনে করি আজ বিশ্বের আরও অনেক দেশ উপলব্ধি করছে যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান কেবল প্রয়োজনীয় নয়, এটি আগের চেয়ে আরও প্রয়োজন বর্তমান পরিস্থিতিতে'।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইজরাইল তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। হামাস ইজরায়েলের প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা করেছিল। এছাড়া ২২০ জনকে বন্দি করে। একই সময়ে, হামাস পরিচালিত গাজার কর্মকর্তাদের মতে, ইজরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় পঁচিশ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যার অধিকাংশ মহিলা ও শিশু।