Advertisment

করোনায় মৃতের সংখ্যা গণনায় WHO-এর কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন ভারতের

রাষ্ট্রসংঘের তথ্য অনুসারে কোভিড -১৯ এর ফলে ১.৫০ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বে প্রাণ হারিয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India records new Covid19 omicron cases 25 February 2022

দিল্লিতে কোভিড পরীক্ষার জন্য সোয়াব নমুনা নেওয়ার কাজ চলছে।

কোভিডে মৃত্যুর পরিসংখ্যান নির্ণয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাণিতিক মডেল নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলল ভারত। শনিবার ভারত জানিয়েছে এত ব্যাপক জনসংখ্যার একটা দেশ ভারতে এই মডেল কার্যকর নয়। ভারতের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে একই মডেল কী করে সমান ভাবে কার্যকর হয় যেখানে বিশ্বের একাধিক দেশে জনসংখ্যার তারতম্য বিস্তর? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, "এই ধরণের একটি মডেল যা কম জনসংখ্যার দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা ভারতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে”।

Advertisment

যদিও অনেক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মনে করছেন ভারতে কোভিডে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা যাতে সামনে আসতে না পারে তার জন্যই হুর গাণিতিক মডেল নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ভারত । ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে কোভিডে মৃতের সংখ্যা ৫.২ লক্ষ। সেখানে বিভিন্ন রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে এই মৃত্যুর সংখ্যা কমপক্ষে ৪০ লক্ষের কাছাকাছি।

নিউইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ভারতের এমন অভিযোগের ফলে মহামারী-জনিত কারণে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশের WHO-এর প্রচেষ্টা বাঁধা প্রাপ্ত হচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘের তথ্য অনুসারে  কোভিড -১৯ এর ফলে ১.৫০ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বে প্রাণ হারিয়েছেন। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুসারে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা বর্তমানে ৬১.৯৭ লাখ।

আরও পড়ুন: ফের চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনা, ঊর্ধ্বমুখী দৈনিক সংক্রমণ, বাড়ল অ্যাক্টিভ কেস

হু’র পরিসংখ্যানে সরাসরি কোভিডের কারণে মৃত্যু, পোস্ট কোভিড মৃত্যু এবং মহামারীর কারণে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে মৃত্যুর সংখ্যা আলাদা ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারত অভিযোগ করেছে ভারতে মৃতের সংখ্যা গণনা করতে হু যে পদ্ধতি প্রয়োগ করেছে। আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স সহ একাধিক দেশে সেই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়নি। একই সঙ্গে ভারতের অভিযোগ অপেক্ষাকৃত কম জনসংখ্যার একটা দেশে মডেলটি যে ভাবে কাজ করবে, ভারতের মত বৃহৎ জনসংখ্যার দেশে তা কখনই সমান ভাবে কাজ করতে পারে না।

এদিকে বিশ্ববিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল 'দ্য ল্যানসেটেও’ একই বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে (The Lancet)। তাদের বক্তব্য, বিশ্বে করোনায় সবথেকে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ভারতেই। সেই সংখ্যাটা ভারতের সরকারি পরিসংখ্যানের তুলনায় আট গুণ বেশি! ২০২১ সা্লের শেষে ভারতে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল পৃথিবীতে সবথেকে বেশি। আনুমানিক এই সংখ্যাটা ছিল, ৪০ লাখেরও বেশি (৪.০৭ মিলিয়ন)।

পরিসংখ্যানের ফারাকের একটা বড় কারণ হল, মৃত্যুর সময়। বহু মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সঙ্গে সঙ্গেই মারা গিয়েছেন। কিন্তু, অনেকে কোভিড থেকে সেরে উঠলেও ভাইরাসের ফলে তাঁদের শরীরে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আর এর জেরেই পরবর্তীতে মৃত্যু হয় তাঁদের। ফলে কোভিডে মৃতের সরকারি তালিকা থেকে এই রোগীরা বাদ পড়ে গিয়েছেন। সমীক্ষা বলছে, বাস্তবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যতজনের মৃত্যু হয়েছে, এবং যতজনের মৃত্যু নথিভুক্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে একটা বিরাট ফারাক রয়ে গিয়েছে।প্রসঙ্গত, ভারতের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১ লাখ কোভিড আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৮.৩ জনের। কিন্তু, সমীক্ষা বলছে, এই সংখ্যাটা আদতে প্রতি ১ লাখে ১৫২.৫।

WHO
Advertisment