প্যাংগং হ্রদের ধারে ২০২০ সালের মে মাসে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারত ও চিন সেনা৷ আবারও চিনের আগ্রাসনে বেড়েছে উদ্বেগ। এবার প্যাংগং হ্রদের (Pangong Tso) উপর সেতু নির্মাণ করছে চিন। উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে এই ছবি ধরা পড়েছে। যা নিয়ে রক্তচাপ বেড়েছে দিল্লির।
বৃহস্পতিবার তীব্র প্রতিক্রিয়া দিল ভারত। অরুণাচল প্রদেশের একাধিক জায়গার নামকরণ করা, ভারতের সাংসদকে চিঠি দিয়ে তিব্বতের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ভর্ৎসনা করা এবং প্যাংগং হ্রদের উপর সেতু নির্মাণকে ঘিরে আপত্তি জানাল নয়াদিল্লি। একে চিনের জবরদখল বলে উল্লেখ করল ভারত। অরুণাচলের বিভিন্ন জায়গার নামকরণ করাকে অদ্ভূত আচরণ এবং ভারতীয় সাংসদকে ভর্ৎসনা করার ঘটনাকে অপ্রীতিকর বলে উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি।
এদিন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আপত্তি জানিয়েছে বিবৃতি জারি করেছেন। অরুণাচলের বিভিন্ন জায়গার নামকরণ করেছে চিন। তা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে অরিন্দম বাগচি বলেন, "গত সপ্তাহে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট দেখেছি আমরা। আমরাও আমাদের তরফ থেকে এমন অদ্ভুত আচরণ এবং অনৈতিক দাবিকে নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছি।"
আরও পড়ুন প্যাংগংয়ের উপর চিনের নির্মিত নয়া সেতু ঘিরে শোরগোল
গত মাসে চিন অরুণাচলের ১৫টি জায়গাকে নিজেদের বলে দাবি করে চিনা, তিব্বতি এবং রোমান হরফে নাম দিয়েছে। অরুণাচলকে দক্ষিণ তিব্বত বলে দাবি করে আসছে চিন। দিল্লি এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানিয়েছে, ভিন্ন নাম আবিষ্কার করলেই সত্যকে বদলানো যায় না। একইসঙ্গে প্যাংগং হ্রদের উপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বিষয়টির উপর নজর রেখেছে দিল্লি।
বাগচি বলেছেন, "এই সেতুটি জবরদখলের জায়গায় নির্মিত হয়েছে। ৬০ বছর ধরে জবরদখল করে রেখেছে চিন। আপনারা সবাই জানেন, ভারত কোনওদিনই সেই দখলকে মান্যতা দেয়নি।" উল্লেখ্য, ভূ-বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়েন সাইমন উপগ্রহ চিত্র টুইট করে দাবি করেছেন, প্যাংগং হ্রদের উপরে সেতু নির্মাণ করছে বেজিং। এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে খুব কম সময়ের মধ্যে সীমান্তে পৌঁছে যাবে লালফৌজ। বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, ভারতকে চাপে রাখতেই চিন এই সেতু তৈরি করছে। যদিও যে স্থানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে সেটি চিনের সীমান্ত অংশের মধ্যে পড়ে। তাও এই সেতু নির্মাণে লালফৌজের অন্য মতলব আঁচ করছে ভারত।
আরও পড়ুন প্যাংগংয়ে সেতু, কেন নীরব প্রধানমন্ত্রী মোদী? প্রশ্ন তুললেন রাহুল
হ্রদের দুইদিক জুড়ে ফেলতে পারলে চিন অতি দ্রুত সৈন্য ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র পারাপার করতে পারবে৷ সাইমন টুইটে দাবি করেছেন, হ্রদের একটি সংকীর্ণ অংশে সেতুটি তৈরি করা হচ্ছে৷ সেতু নির্মাণের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে মাত্র কয়েকমিটার দুরেই এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে ভারতের বিরুদ্ধে সেনা এবং যুদ্ধসরঞ্জাম জড়ো করতে চিন আরও সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে যাবে বলে মত কূটনীতিকদের। একই সঙ্গে প্যাংগংয়ের দুই তীরেই তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথ আরও প্রশস্ত হবে। প্যাংগংয়ের উত্তর তীরের ফিঙ্গার ৮ থেকে ২০ কিলোমিটার পূর্বে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।