বিরাম নেই সংক্রমণে। এই নিয়ে টানা চারদিন দেশে করোনা আক্রান্ত ২০ হাজারের ওপরেই! তবে কী আছড়ে পড়তে চলেছে চতুর্থ ঢেউ? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। যে হারে বেড়ে চলেছে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা তাতে নয়া ঢেউ আছড়ে পড়া অসম্ভব কিছু নয় বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন অনুসারে একদিনে দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৫২৮ জন যা গতকালের থেকে অনেকটাই বেশি। রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে একদিনে করোনার বলি হয়েছেন ৪৯ জন। যা গতকালের থেকে বেশ কিছুটা কম। তবে ভাবাচ্ছে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা এবং পজিটিভিটি রেট।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে এই মুহূর্তে দেশে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৪৪৯ জন। যা গতকালের থেকে প্রায় আড়াই হাজার বেশি। দেশে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মোট মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষ ২৫ হাজার ৭০৯ জন। বুলেটিন অনুসারে একদিনে করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়েছেন ১৭ হাজার ৭৭০ জন। সুস্থতার হার ৯৮.৪৭ শতাংশ। কেরল, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র এবং বাংলা এই পাঁচটি রাজ্যের সংক্রমণ বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। বঙ্গে করোনা সংক্রমণে লাগাম টানতে উদ্যোগী হল রাজ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুন: <হঠাৎই ভারতের বিমান নামানো হল পাকিস্তানে, শোরগোল ফেলে দেওয়া ঘটনার চর্চা তুঙ্গে>
রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী শনিবার রাজ্যের সকল জেলার ডিএম, এসপি এবং সিএমওএইচ সহ সিনিয়র আধিকারিকদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে অংশ নেন। প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে জেলায় জেলায় কোভিড প্রটোকল মেনে চলার পাশাপাশি বুস্টার ডোজে গতি আনতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
পাশাপাশি বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে বিশেষ প্রচারের ওপর জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে এদিনের এই বৈঠকে। একই সঙ্গে জেলার বাজারগুলিতে যথাযথ কোভিড বিধি মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা দেখতে সারপ্রাইজ ভিজিটের কথা বলা হয়েছে এদিনের বৈঠকে।
কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না করোনা সংক্রমণ। পরপর দু’দিন রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৩ হাজারের বেশি থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় তা খানিকটা নিম্নমুখী। বাংলায় একদিনে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২,৮৩৯ জন। যা গতদিন ছিল ৩,০৬৭ জন। মোট আক্রান্ত ২০,৬৮,১৯৯ জন। পজিটিভিটি রেট সামান্য কমে ১৮.০৫ শতাংশ। শনিবার সুস্থ হয়েছেন ২,২৬৩ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ লক্ষের বেশি মানুষ করোনা টিকা পেয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ভারতে ভ্যাকসিন পেয়েছেন ১৯৯ কোটি ৯৮ লক্ষ ৮৯ হাজারের বেশি মানুষ। রেকর্ড সময়ে টিকাকরণের ২০০ কোটির মাইলফলক ছোঁয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
এই মুহূর্তে দেশে অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ০.৩৩ শতাংশ। দৈনিক ইতিবাচক হার ৫.২৩ শতাংশ। অন্যদিকে সাপ্তাহিক পজিটিভিটি হার এই মুহূর্তে ৪.৫৫ শতাংশ। দেশে এক দিনে ৪৯ জনের মৃত্যুর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কেরালা। সেখানে একদিনে ১৭ জন কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন এরপরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র। একদিনে করোনার বলি ৮।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। একদিনে করোনার প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন। অসম, দিল্লি, ঝাড়খণ্ডে ২ জন করে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। বিহার, গুজরাট, হিমাচল, পন্ডিচেরি, ত্রিপুরা, উত্তারাখন্ডে একদিনে করোনার বলি হয়েছেন ১ জন করে।