আরও বাড়ল দেশের দৈনিক সংক্রমণ। বিদ্যুৎ গতিতে বাড়ছে করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও। ফের একবার ভাইরাসের কামড় নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে দেশজুড়ে। বিশেষজ্ঞদের কপালেও নতুন করে চিন্তার ভাঁজ। ভাইরাসের মোকাবিলায় ফের একবার কোভিড প্রোটোকল মানায় জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শুক্রবারের পর শনিবার ফের বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৩২৯ জন। পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। গত তিন মাসে যা সর্বোচ্চ। সব থেকে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। সেখানে একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০১ জন। শুধুমাত্র মুম্বইতেও এই সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৬। যা আগের দিনের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। সেই সঙ্গে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। এই মুহুর্তে দেশে মোট করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪০ হাজার ৩৭০।
চলতি বছরই করোনার চতুর্থ ঢেউ প্রত্যক্ষ করবে দেশ। আইআইটি কানপুরের ম্যাথমেটিক্স এবং স্ট্যাটিসটিক্স বিভাগের গবেষণায় এমনই সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে। উল্লেখ্য, কোভিডের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার সময়কাল প্রথমে আইআইটি কানপুরের তরফেই প্রকাশ করা হয়েছিল। এবার কী সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে? হু জানিয়েছে বড়সড় বিপদ না এলেও ছোট একটা তরঙ্গের সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত এক সপ্তাহে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে রেকর্ড হারে। তথ্য বলছে প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ফের একবার কাঁপুনি ধরাচ্ছে বানিজ্যনগরীতে।
আরও পড়ুন: ‘উন্মাদ মুসলিমদের দেখে নবীও অবাক হতেন’, বিক্ষোভ ইস্যুতে মন্তব্য তসলিমার
ডিসেম্বরেই দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন ভারত দাপিয়েছিল। যা করোনার সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ বলে পরিচিত। পরিস্থিতি সবেমাত্র নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। তার মধ্যেই ফের চতুর্থ ঢেউ-য়ের ভ্রুকুটির কথা শোনাল আইআইটি কানপুরের গবেষকরা। ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি দেশে প্রথম কোভিড-১৯ সংক্রমিতের হদিশ মিলেছিল। তারপরই প্রথম ঢেউ মাথাচাড় দেয়। করোনার চতুর্থ ঢেউ-য়ের সময় নিয়ে আইআইটি-র গবেষণা বাস্তবায়িত হলে তা প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে চতুর্থ তরঙ্গের ব্যবধান হবে ৯৩৬ দিনের। এদিকে ভারতে রোজই সন্ধান মিলছে ওমিক্রনের নয়া স্ট্রেনে আক্রান্ত রোগীর।
আইআইটি কানপুরের ভবিষ্যতবানীতেই সিলমোহর দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী ডাঃ সৌম্য স্বামীনাথন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলা সময় তিনি বলেন, “ করোনার আরও একটা ছোট ঢেউয়ের সম্ভাবনা যে একেবারেই নেই তা এই পরিস্থিতিতে বলা যাচ্ছে না। রোজই বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে বয়স্কদের বুস্টার ডোজ যে বাধ্যতামূলক সেকথা আরও একবার মনে করান তিনি। তিনি বলেন, ৬০ বছরের ওপরের সকলের বুস্টার ডোজ গ্রহণ এবং সঙ্গে যাবতীয় কোভিড বিধি মেনে চলা দেশে পরবর্তী ঢেউকে আটকাতে পারে। সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ কে সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। ডব্লিউএইচও প্রধান বিজ্ঞানী আরও মনে করেন অনেকে বাড়িতেই করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন সেক্ষেত্রে সংখ্যার হের-ফের হওয়া স্বাভাবিক। পাশাপাশি আমাদের হাসপাতালে ভর্তি এবং সার্বিক মৃত্যুহারের ওপর বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন”।