লক্ষ্মীবারে ইতিহাস সৃষ্টি করল ভারত। ছুঁল ১০০ কোটি টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা। যার জেরে দেশজুড়ে খুশির জোয়ার। সেই জোয়ারে শামিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। টুইট করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী এই টিকাকরণের মাইলস্টোনকে ভারতীয় বিজ্ঞান, শিল্পোদ্যোগ এবং ১৩০ কোটি ভারতীয়র সম্মিলিত প্রচেষ্টার জয় হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন।
এদিন মোদী লেখেন, "ভারত ইতিহাস রচনা করল। আমরা ভারতীয় বিজ্ঞান, শিল্পোদ্যোগ এবং ১৩০ কোটি ভারতীয়র সম্মিলিত প্রচেষ্টার জয়ের সাক্ষী রইলাম। ১০০ কোটি টিকাকরণ হওয়ার জন্য ভারতকে অভিনন্দন। আমাদের চিকিৎসক, নার্স এবং এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য যাঁরা কাজ করেছেন তাঁদের কুর্নিশ।"
এদিন তিনি দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালেও পরিদর্শনে যান। সেখানে টিকাগ্রহীতা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মোদী। পরে দিনের আরেকটি অনুষ্ঠানে গিয়ে মোদী বলেন, "দেশ এখন ১০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অতিমারির সঙ্গে লড়াই করার জন্য ১০০ কোটি টিকার ডোজের সুরক্ষাকবচ পেয়ে গেছে। ২১ অক্টোবর, ২০২১ এই দিনটা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। কারণ ভারত ১০০ কোটি টিকাকরণের রেকর্ড করেছে।"
করোনার টিকাকরণে ইতিহাস গড়ল ভারত। আজই ১০০ কোটি টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলল দেশ। বুধবার পর্যন্ত দেশের ৯৯ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষের টিকাকরণ হয়েছিল। আজ সকালে টিকাকরণ ১০০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রের তথ্য অনুযয়ী, ইতিমধ্যেই দেশের ৭৪ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন। ৩১ শতাংশ নাগরিক করোনা টিকার দুটি ডোজই পেয়ে গিয়েছেন।
করোনার সংক্রমণ এড়াতে দ্রুত গতিতে টিকাকরণের জন্য শুরু থেকেই সওয়াল করে চলেছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রীয় সরকারও টিকাকরণে আরও বেশি গতি আনতে তৎপরতা জারি রেখেছে। বুধবার পর্যন্ত দেশের ৯৯ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষের টিকাকরণ হয়েছে। আজ সকালেই ১০০ কোটি টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলল ভারত। টিকাকরণে এই নতুন ইতিহাস তৈরির জন্য ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
অন্যদিকে নীতি আয়োগের সদস্য ভিকে পলও টিকাকরণের এই কৃতিত্ব অর্জনের জন্য দেশবাসী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরলস প্রয়াসকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। তিনি এদিন বলেন, ‘ভারতের জনগণ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিনন্দন। যে কোনও দেশের জন্য ১ বিলিয়ন ডোজ প্রয়োগে পৌঁছনো অসাধারণ একটি ব্যাপার। ভারতে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর মাত্র ৯ মাসের মধ্যে এই কৃতিত্ব অর্জন করা গেল।’
তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মোট ভ্যাকসিন ডোজের ৬৫ শতাংশ দেশের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে প্রয়োগ করা হয়েছে। করোনা টিকার প্রথম ডোজ সফলতার সঙ্গে প্রয়োগের পাশাপাশি এবার রাজ্যগুলিকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগেও আরও বেশি উদ্যোগী হতে পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত দেশের আটটি রাজ্যে ৬ কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে এখনও পর্যন্ত ১২ কোটি ৮ লক্ষ মানুষ করোনা টিকা পেয়েছেন।
আরও পড়ুন টিকাকরণে ইতিহাস, ১০০ কোটির মাইলস্টোন ছুঁল ভারত
মহারাষ্ট্রে ৯ কোটি ২৩ লক্ষ নাগরিক করোনার টিকা পেয়েছেন। একইভাবে পশ্চিমবঙ্গের ৬ কোটি ৮২ লক্ষ বাসিন্দা টিকা পেয়েছেন। গুজরাতে টিকাকরণ হয়েছে ৬ কোটি ৭৩ লক্ষের। মধ্যপ্রদেশে ৭ কোটি ৬৭ লক্ষ, কর্নাটকে ৬ কোটি ১৩ লক্ষ এবং রাজস্থানে ৬ কোটি ৭ লক্ষ মানুষের করোনার টিকাকরণ হয়েছে।
ভারতে করোনার টিকাকরণ শুরু হয়েছিল চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি। প্রথমেই চিকিৎসক, নার্স-সহ প্রথম সারির করোনা-যোদ্ধাদের টিকার প্রয়োগ শুরু হয়। এরপর ১ মার্চ থেকে প্রবীণ নাগরিক ও ৪৫ বছরের বছরের ঊর্ধ্বে থাকা কোমর্বিডিটি রোগীদের টিকার প্রয়োগ শুরু হয়। ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের উপরে থাকা প্রত্যেক নাগরিকের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। সবশেষে গত ১ মে থেকে দেশজুড়ে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেকের টিকাকরণ শুরু হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন