প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে' ভারতের স্থান ক্রমেই নামছে! পিছিয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের থেকেও। এনিয়ে মুখ খুলেছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। তিনি এক ট্যুইট বার্তায় লিখেছেন, "আমাদের সবার লজ্জায় মাথা ঝুঁকে যাচ্ছে বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম সূচকে ১৮০ টি দেশের মধ্যে ভারত ১৬১ তম স্থানে রয়েছে,"।
বুধবার (৩রা মে) বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম ডে উপলক্ষে বিশ্ব মিডিয়া মনিটরিং সংস্থা 'রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস' তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই সংস্থা প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গত বছর প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে ভারতের স্থান ছিল ১৫০ তম। এবার তা অনেকটাই নেমে গিয়েছে। আরএসএফ-এর রিপোর্ট অনুসারে, ভারত ২০২৩ সালের বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৬১ তম স্থানে রয়েছে।
গত বছর, RSF ১৮০ টি দেশের সমীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে জানায়, ভারতের স্থান ছিল ১৫০ তম স্থানে। আরএসএফ রিপোর্টে বলা হয়েছে, "তিনটি দেশের পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক - তাজিকিস্তান (এক স্থান নেমে জায়গা পেয়েছে ১৫৩তম স্থানে), ভারত (১১ স্থান নেমে জায়গা পেয়েছে ১৬১তম) এবং তুরস্ক (১৬ স্থান নেমে জায়গা পেয়েছে ১৬৫তম স্থানে।)।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বড় পতন ভারতের। এক বা দুই নয়, ১১ ধাপ নীচে নেমে গেল ভারত। ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৬১তম স্থান পেয়েছে ভারত। আগের বছর ১৫০তম স্থানে ছিল ভারত। অর্থাৎ এ বছর আরও ১১ ধাপ নীচে জায়গা হল। সেই তুলনায় পাকিস্তান তালিকায় অনেক উপরে রয়েছে। গত বছর যেখানে ১৫৭ তম স্থানে ছিল তারা, এ বছর ১৫০তম স্থান দখল করেছে।
ভারতীয় মহিলা প্রেস কর্পস, প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া এবং প্রেস অ্যাসোসিয়েশন একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে সূচকে দেশের র্যাঙ্কের পতনের বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "সর্বশেষ RSF রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত সহ অনেক দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সূচকের অবনতি হয়েছে।" বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গ্লোবাল সাউথের উন্নয়নশীল গণতন্ত্রের জন্য, যেখানে গভীর বৈষম্য বিদ্যমান, সেখানে মিডিয়ার ভূমিকাকে অবমূল্যায়ন করা যাবে না। একইভাবে, চুক্তিতে পুনর্বহালের মতো অস্থিতিশীল কাজের পরিস্থিতিও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য চ্যালেঞ্জ। অনিরাপদ কাজের পরিবেশ কখনোই মুক্ত গণমাধ্যমে অবদান রাখতে পারে না।"
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় প্রথম তিন স্থানে রয়েছে নরওয়ে, আয়ারল্য়ান্ড এবং ডেনমার্ক। একেবারে শেষের দিক থেকে তিনটি দেশ হল ভিয়েতনাম, চিন এবং উত্তর কোরিয়া। একই সঙ্গে, যে সমস্ত দেশে সাংবাদিকরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে কাজ করেন, সেই ৩১ দেশের মধ্যে রাখা হয়েছে ভারতকে। ভারতের পরিস্থিতিতে 'অত্যন্ত গুরুতর' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হিংসা, রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়া এবং মিডিয়ার মালিকানার কেন্দ্রীকরণ সবই প্রমাণ করে যে 'বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে' সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ঝুঁকির মুখে রয়েছে।