ভারত-মার্কিন গোয়েন্দা ও সেনাস্তরে পাস্পারিক সহযোগিতা আরও তীব্র হয়েছে। গতমাস থেকে এই ক্রমশ তা বাড়ছিল। এ মাসে তার গতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তেজনা আগের থেকে সামান্য কমলেও ইন্দো-চিন বিরোধ অব্যাহত। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর আগ্রাসন বাজায় রেখেছে চিন। এই অবস্থায় এখনও নিয়ন্ত্রণরেখায় বেশ কয়েকটি পয়েন্টে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে দুই দেশের সেনা। এরই মাঝে নীরবে ভারত-মার্কিন তথ্য আদানপ্রদান চলেছে। লাদাখ উত্তেজনার মাঝেই বিগত ১১ সপ্তাহ ধরেই এই আদানপ্রদান চলছে বলে জানা গিয়েছে।
জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মার্কিন বিদেশ সচিবের সঙ্গে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ফোনে কথা হয়। এই কথোপকথনই ভারত-মার্কিন সেনা ও গোয়েন্টা পর্যায়ের সহযোগিকতা বৃদ্ধির অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে যে, এই আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট সি ও'ব্রায়েনের সঙ্গে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ অফ ডিফেনন্স স্টাফের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই গত সোমবার, এ দেশের নোবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে ভারত মহাসাগরে মহড়া চালিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম রণতরী ইউএসএস নিমিৎজ। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে মুক্ত রাখতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে মার্কিন নৌ বাহিনী। সূত্রের খবর, পম্পেও ও জয়শঙ্করের কথোপকথন রাজনৈতিকভাবেও এই গোয়েন্দা-সেনা তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে কার্যকরী হয়েছে। জানা গিয়েছে যে, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে মার্কিন নিরাপত্তা সচিব টি এস্পার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
উচ্চ পর্যায়ের উপগ্রহ চিত্র, টেলিফোনিক বাধা, ও নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনাবাহিনী-সমরাস্ত্রের মজুতদারি নিয়ে ভারত-মার্কিন তথ্য আদানপ্রদানের হবে। দিল্লির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ন্ত্রণরেখায় লাল ফৌজের গতিবিধির উপর তীব্র নজর রাখা হয়েছে।
চিনা আগ্রাসন বাড়তেই ভারতকে নিরাপত্তা সহয়োগিতার কথা জানিয়েছিল আমেরিকা। তারপর থেকেই পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাঁচটি মার্কিন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে। এগুলি হল- সেনা যাতায়াতের জন্য সি-১৭ গ্লোবমাস্টাপ ৩, হেভি লিফ্টিংয়ের জন্য চিনুক সিএইচ-৪৭ হেলিকপ্টার, আর্মি স্ট্রাইক কভারের জন্য এএইচ-৬৪ই অ্যাপাচে অ্যাটাক হেলিকপ্টার, বিদেশ নিরিক্ষণের জন্য পি ৮১ পোসেইডন ও বিশেষ অভিযানের জন্য যুদ্ধবিমান।
তবে, ভারত-চিন সেনা ও কূটনৈতিক পর্যায়ে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনা জারি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে 'কৌশলগত' কারণেই এই সহযোগিতার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে চায়নি ভারত ও আমেরিকা।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন