Advertisment

আর সহ্য নয়! এবার শত্রু দমনে প্রথমেই আঘাত হানবে ভারত, রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানালেন দিল্লির দূত

পাকিস্তানের নাম না করে নাগরাজ বলেন, ‘তৃতীয় একটি দেশ থেকে যখন দেশহীনরা (নন স্টেট অ্যাক্টর) হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেয়, তখন তার মোকাবিলা করাই আমাদের নীতি।’

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ফাইল ছবি।

এতদিন সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারতের নীতি ছিল, আগে আক্রান্ত, পরে প্রত্যাঘাত। কিন্তু এবার সেই নীতি থেকে সরছে নয়া দিল্লি। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক নীতি নেবে ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জে এমন ইঙ্গিত বৃহস্পতিবার দিলেন দেশের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি কে নাগরাজ নাইডু। সীমান্ত পারের সন্ত্রাস মোকাবিলায় প্রয়োজনে আগেভাগেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা বিমান হানা করাতে পারে ভারত। দ্বিতীয় শক্তির মাটিকে ঘাটি করে তৃতীয় শক্তির আস্ফালন আর সহ্য করবে না মোদী সরকার। ঠিক এই ভাষাতেই এদিন রাষ্ট্রপুঞ্জে সরব হয়েছিলেন ওই ভারতীয় আমলা।

Advertisment

মেক্সিকোয় আয়োজিত ‘আরিয়া ফর্মুলা’ বৈঠকে বুধবার নাগরাজ জানান, বহু বছর ধরেই ‘আগে আক্রান্ত হলে প্রত্যাঘাত’ নীতি অনুসরণ করেছে ভারত। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সীমান্ত পারের সন্ত্রাস ঠেকাতে প্রয়োজনে প্রথমে আঘাত হানার কৌশল নেওয়া হতে পারে। রাষ্ট্রপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত ওই বৈঠকে পাকিস্তানের নাম না করে নাগরাজ বলেন, ‘তৃতীয় একটি দেশ থেকে যখন দেশহীনরা (নন স্টেট অ্যাক্টর) হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেয়, তখন তার মোকাবিলা করাই আমাদের নীতি।’

আমেরিকায় ৯/১১ সন্ত্রাসের পর রাষ্ট্রপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে গৃহীত ১৩৬৮ (২০০১) এবং ১২৭৩ (২০০১) প্রস্তাবের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন তিনি । ওই সনদ দু’টিতে সন্ত্রাস থেকে আত্মরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অধিকারের কথা বলা হয়েছিল। প্রসঙ্গত আরিয়া বৈঠকের সুপারিশগুলি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। ৯/১১ সন্ত্রাসের পরেও নিরাপত্তা পরিষদের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে আলাদা ভাবে সন্ত্রাস দমনের সম্ভাব্য পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।

সম্প্রতি বিদেশ সচিব বিজয় গোখলে গোয়েন্দা সূত্রের উল্লেখ করে জানিয়েছিলেন, পাক জঙ্গি সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া ভারতে ফিদায়েঁ হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মেক্সিকোয় নাগরাজ সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানান, জঙ্গিদের কাজে লাগিয়ে কোনও দেশ যদি ছায়াযুদ্ধ চালাতে চায়, তবে চুপ করে বসে থাকবে না ভারত। মুম্বইয়ে ১৯৯৩ সালের ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, ২৬/১১ হামলা, পঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হানা এবং পুলওয়ামা সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটি নির্দিষ্ট দেশ থেকে হামলাকারীদের প্রশিক্ষণ, অর্থসাহায্য, প্রয়োজনীয় তথ্য ও অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল। তদন্তে দ্বিতীয় সেই দেশের মদতের প্রমাণও মিলেছে।’

এদিকে, লাগাতার সংঘর্ষের ইতি। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হল ভারত ও পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জম্মু-কাশ্মীরের ওই অঞ্চলে বুধবার মধ্যরাত থেকে গুলি বিনিময় বিরতিতে সম্মত হয়েছে। দুই বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে এই কথা।

এরপর থেকে দুই সেনাবাহিনীর এই দুই শীর্ষ আধিকারিক হটলাইনে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। তাঁরা দেখবেন, যাতে ভারত ও পাকিস্তানের তরফে কোনওরকম সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন এবং ভুল বোঝাবুঝি না হয়। সীমান্তে ফ্ল্যাগ মিটিং থেকে শুরু করে বাকি সব প্রক্রিয়ায় আগের মতো চলবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মিলিটারি অপারেশনের ডিজির মধ্যে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। দুই আধিকারিক হটলাইনে যোগাযোগ রাখবেন। প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রণরেখা সামরিক পরিস্থিতি নজরে রাখবেন তাঁরা। যাতে স্থিতাবস্থা ও শান্তি বজায় থাকে।

প্রসঙ্গত, গত বছর অক্টোবর মাসে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব দাবি করেছিলেন, ২০০২ সালের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি বারবার লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তানি সেনা। গ বছর অক্টোবর পর্যন্ত ৩,৮০০ বারেরও বেশি সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। সেইসঙ্গে সীমান্ত এলাকায় জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ করানো, নিয়ন্ত্রণরেখায় ড্রোনে করে অস্ত্র ফেলার উদাহরণও রয়েছে।

পাক সেনার বিরুদ্ধে কাশ্মীর সীমান্তে প্ররোচনা মূলক কাজকর্মের অভিযোগে রাষ্ট্রসংঘেও একাধিকবার সরব হয়েছে ভারত। কিন্তু বিদেশমন্ত্রকের এই পরিসংখ্যান পাক দ্বিচারিতা প্রকাশ করে দিয়েছিল। এবারও কতটা চুক্তি মানে পড়শি দেশ সেটাই দেখার।

pakistan India United Nations Terrorist
Advertisment