তাকে "জঙ্গি" হিসেবে ঘোষণার ৬ বছর আগে, খালিস্তান টাইগার ফোর্স (কেটিএফ) প্রধান হরদীপ সিং নিজ্জরের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে ইন্টারপোল রেড কর্নার নোটিস (আরসিএন) জারি করা হয়েছিল। ভারতীয় সংস্থাগুলি কানাডা সরকারকে এও জানিয়েছিল যে নিজ্জর এক ডজনেরও বেশি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত, ভারতে খুন এবং অন্য সন্ত্রাসমূলক কাজে যোগ রয়েছে নিজ্জরের। তবে, কানাডা সরকার তাকে "নো-ফ্লাই লিস্টে" রাখা ছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও কোনও পদক্ষেপ করেনি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এমনই খবর মিলেছে।
হরদীপ সিং নিজ্জর এই বছরের জুনে কানাডায় খুন হয়। খলিস্তানী এই নেতার খুন নিয়েই ভারত-কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ এখন তুঙ্গে উঠেছে। কানাডার দাবি, নিজ্জর খুনে ভারতীয় এজেন্সির যোগ রয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়েছে দিল্লি। কানাজডার সঙ্গে দ্বন্দ্ব এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সেদেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লি। হরদীপ সিং নিজ্জর জাল পাসপোর্ট নিয়ে কানাডায় ঢুকেছিল।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির দ্বারা প্রস্তুত করা তার ডসিয়ার অনুযায়ী, নিজ্জর ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে কেসিএফ জঙ্গিদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২০১২ সাল থেকে সে কেটিএফ প্রধান জগতার সিং তারার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিল। “সন্ত্রাসবাদের মামলায় তার নাম উঠে আসার পর ১৯৯৬ সালে জাল পাসপোর্টে কানাডায় পালিয়ে যায় নিজ্জর। সেখানে পৌঁছোনোর পর ট্রাক ড্রাইভার হিসাবে কাজ শুরু করে সে। পরে সে পাকিস্তানে থাকা তারার সঙ্গে যোগাযোগ করে।", একটি সূত্র এমনই জানিয়েছে।
আরও পড়ুন-ভারত-কানাডার তিক্ততার মাঝেই বাড়ছে তৎপরতা, খালিস্তানিদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানের ভাবনা
ওই সূত্রটি আরও বলেছে, “২০১২ সালের এপ্রিলে বৈশাখী জাঠের সদস্য হিসেবে নিজ্জরও পাকিস্তানে গিয়েছিল। যেখানে নিজ্জর প্রায় ১৫ দিন ধরে অস্ত্র ও বিস্ফোরক প্রশিক্ষণে অংশও নিয়েছিল। কানাডায় ফিরে আসার পর, সেদেশে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানে জড়িতদের সঙ্গে সে যোগাযোগ করে। তাদের মাধ্যমে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করতে শুরু করে নিজ্জর।”
ওই সূত্রটি জানিয়েছে, কানাডায় পৌঁছোনোর পর নিজ্জর তারার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভারতে সন্ত্রাসমূলক হামলার পরিকল্পনা করছিল। কানাডায় একটি গ্যাংও সে তৈরি করেছিল। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় তাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে, নিজ্জর হরিয়ানার সিরসার ডেরা সাচ্চা সৌদা সদর দফতরে একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু ভিসা বাতিল হওয়ায় সে ভারতে পৌঁছোতেই পারেনি।