ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলো চায় রাশিয়ায় আটকে থাকা তাদের লভ্যাংশের অর্থ থেকে ভারতের তেল আমদানির ব্যয় মেটানো হোক। ওই লভ্যাংশের অর্থ রাশিয়ায় তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করা হোক। আর, সেই অর্থ মস্কো থেকে ভারতের তেল কেনার জন্য ব্যবহার করা হোক। রাশিয়া বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় অশোধিত তেলের উৎস। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ কমার্শিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্সের তথ্য অনুসারে, শুধুমাত্র জুলাই মাসে, ভারতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির মূল্য ছিল ৩.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলোর প্রস্তাব এখন বিবেচনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিদেশে ওএনজিসি (ওভিএল), অয়েল ইন্ডিয়া (ওআইএল), ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি) এবং ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসিএল) নামে ব্যবসা চালায়। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত এই তেল সংস্থাগুলোর বিদেশি এই সব শাখার লভ্যাংশের অর্থ প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার। যা রাশিয়ায় তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আটকে আছে। কারণ, রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণের পর পেমেন্ট চ্যানেল-সম্পর্কিত বিধিনিষেধের কোপে পড়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই ভারতীয় তেল সংস্থাগুলো তাদের রুশ অংশীদারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। পাশাপাশি, এনিয়ে নয়াদিল্লি এবং মস্কোর মধ্যে শীর্ষস্তরে আলোচনায়ও হয়েছে। কিন্তু, সমস্যা মেটেনি।
আরও পড়ুন- সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে, শহিদ সেনাকর্তা মনপ্রীত সিংহের জীবনকাহিনি শুনলে হতবাক হয়ে যাবেন!
নাম প্রকাশ না-করার শর্তে ভারতীয় তেল সংস্থার অন্যতম প্রধান এক আধিকারিক বলেছেন, 'এক্ষেত্রে সবচেয়ে চলনসই এবং কার্যকর বিকল্প হতে পারে রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য আংশিক অর্থ প্রদানের জন্য সেই আটকে থাকা লভ্যাংশের অর্থই ব্যবহার করা। কারণ, অনেক আর্থিক এবং আইনি জটিলতা রয়েছে। আমরা একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার জন্য চেষ্টা করছি। তেলের বকেয়াগুলির সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য সরাসরি অর্থ ব্যবহার করা সম্ভব নয়, কারণ তার সঙ্গে কর ব্যবস্থা, হিসেব, আন্তর্জাতিক কর-সহ নানা বিষয় জড়িত। আর, এই সব কারণেই ভারতীয় তেল সংস্থাগুলো মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমী দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করতে চায় না। কারণ, ভারত ভালো করেই জানে যে এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে ভারতও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।' যদিও ভারতের এইসব চিন্তাভাবনাকে রাশিয়া মানতে নারাজ। আটকে থাকা অর্থ দিয়ে তেলের দাম মেটানোর নয়াদিল্লির প্রস্তাব রাশিয়া এখনও গ্রহণ করেনি।