ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগে বড় সংস্কার। ঘোষণা করা হল অগ্নিপথ প্রকল্পের। ভারতীয় সেনা, নৌ ও বায়ু বাহিনীতে একযোগে এই অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যেম সেনা নিয়োগ হবে। এই প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ করা সৈন্যদের অগ্নিবীর বলা হবে। অবিলম্বে এই প্রকল্প কার্যকর হবে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। যুগান্তকারী এই প্রকল্প সূচনার সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং ভারতীয় তিন বাহিনীর প্রধানরা।
সরকারি বিবৃতিতে উল্লেখ, 'ভারতীয় প্রতিরক্ষার তিনটি বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা হল। মূলত এটি সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত প্রতিরক্ষা নীতির সংস্কার। যা অবিলম্বে কার্যকর হচ্ছে।' সপ্তাহ দুয়েক আগেই সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগের নতুন প্রকল্পের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান। সেই প্রস্তাব এ দিন সকালে নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন করেছে।
অগ্নিপথ প্রকল্পে নাত্রা চার বছরের জন্য সেনা জওয়ানরা বাহিনীতে নিয়োগ পাবেন। বেতন হবে মাসিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। অন্যান্য ভাতা দেওয়া হবে এই প্রকল্পের অধীনে নিয়োগপ্রাপ্তদের। নন-ব়্যাঙ্কিং অফিসার হিসেবে কাজ করবেন তাঁরা। মেয়াদ শেষের পরে মিলবে অবসরকালীন পেনশনও। সাড়ে ১৭ বছর থেকে ২১ বছর বয়সিরা এই প্রকল্পের অধীনে কাজ করার সুযোগ পাবেন। অগ্নিপথ প্রকল্পে ভারতীয় প্রতিরক্ষার শসস্ত্র বাহিনীতে মোট ৪৫ হাজার ভারতীয় যোগ দিতে পারবেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র ২৫ শতাংশ স্থায়ী কমিশনের অধীনে আরও ১৫ বছর কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাবেন। চার বছর কাজের মেয়াদের মধ্যে প্রথম ৬ মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
অগ্নিপথ প্রকল্পের অধীনে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগ শুরু হবে।
আগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োগ যাঁরা রেগুলার ক্যাডারে জায়গা পাবেন না তাঁদের কাজ শেষে এককালীন ১১ থেকে ১২ লক্ষ টাকার প্যাকেজ দেওয়া হবে। তবে কোনও থাকবে না। এছাড়া রেগুলার ক্যাডারে থাকার কোনও সুযোগ-সুবিধাও তাঁরা পাবেন না।
এই নতুন কাঠামোটি বিদ্যমান কাঠামোর জন্য কীভাবে ক্ষতিকারক হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন অবরপ্রাপ্ত বহু সেনা অফিসার। তবে সরকারের যুক্তি, এই প্রকল্পে নিয়োগের মাধ্যমে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সবপর্যায়ে তরুণদের ভূমিকা বাড়বে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কথায়, 'এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে এবং চার বছরের চাকরিতে অর্জিত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কারণে এ ধরনের সৈনিকরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরি পাবেন। এটি অর্থনীতির বিকাশ ঘটবে, সামগ্রিক জিডিপি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।'
বর্তমানে বাহিনীতে গড় বয়স আজ ৩২ বছর, যা ছয় থেকে সাত বছরে ২৬-এ নেমে আসবে বলে আশা।