Advertisment

আইএসের ঘরে ঢুকে দিল্লিতে বিস্ফোরণের ছক বানচাল ভারতীয় গোয়েন্দাদের

দিল্লিতে ইসলামিক স্টেটের আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ছক বানচাল করে দিয়েছিল দেশের নিরাপত্তাসংস্থা। এ ঘটনায় গ্রেফতারও করা হয়েছিল একজনকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
is operative

এই আই এস জঙ্গি এখন আফগানিস্তানে মার্কিন জিম্মায় (প্রতীকী ছবি)

দিল্লিতে ইসলামিক স্টেটের আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ছক বানচাল করে দিয়েছিল দেশের নিরাপত্তাসংস্থা। এ ঘটনায় গ্রেফতারও করা হয়েছিল একজনকে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এ ঘটনা ঘটলেও অতি সম্প্রতি এ ব্যাপারে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন উচ্চপদস্থ কূটনীতিবিদ ও গোয়ন্দা সূত্র।

Advertisment

ওই আই এস জঙ্গি দিল্লিতে থাকত ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের ছদ্মবেশে। ধরা পড়ার পরেই সে আফগানিস্তানে পালিয়ে যায়। এখন সে আফগানিস্থানে মার্কিন সেনার হাতে বন্দি বলে জানা গেছে।

এই আফগান জঙ্গির স্বীকারোক্তি ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যের মাধ্যমেই মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তানে তালিবানদের বিরুদ্ধে বড়সড় সাফল্য পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

একটি সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে, আফগানিস্তান, দুবাই ও দিল্লিতে টানা আঠারো মাস নজরদারি চালিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ১২ জন আইএস জঙ্গির একটি দলকে প্রশিক্ষণের পর পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছে সেখানে বোমা হামলার জন্য।

তাদেরই মধ্যে একজন ছিল ধনী ব্যবসায়ীর সন্তান মধ্য কুড়ির তরুণ এই আফগান নাগরিক। তার উপর ভার পড়ে দিল্লিতে আত্মঘাতী হামলা ঘটানোর।

মিশন সফল করতে সে দিল্লি-ফরিদাবাদ সড়কের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়। শুরুর দিকে কলেজ হস্টেলে থাকলেও পরে সে লাজপত নগরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেয় বলে জানা গেছে।

যাতে এক মুহূর্তের জন্যও সে দৃষ্টির বাইরে না যায় বা পালাতে না পারে, সেজন্য পুরো একমাস ধরে তাকে নজরবন্দি রাখতে মোট ৮০ জন তদন্তকারী ও নিরাপত্তারক্ষীকে বহাল করা হয়েছিল বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

ওই আফগান জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যা জানা গেছে, তা থেকে ২০১৭-র ২২ মে ব্রিটেনে জঙ্গি হামলায় এই গোষ্ঠিই জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ব্রিটেনের ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন মোট ২৩ জন।

ওই সূত্রটি জানাচ্ছে, ম্যাঞ্চেস্টারে যে ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল দিল্লিতে হামলার জন্য ওই একই ধরনের বিস্ফোরক চেয়ে পাঠিয়েছিল সে।

আরও পড়ুন, সেনাবাহিনীর গুলিতে চার জঙ্গির মৃত্যু, ইসলামিক স্টেটের ছায়া গভীর হলো কাশ্মীরে

গোয়ন্দাদের এ ব্যাপারে প্রথম টনক নড়ে যখন র-এর গোয়েন্দার জানতে পারেন, তাঁদের নজরে থাকা এক ব্যক্তির কাছে দুবাই থেকে আফগানিস্থানে ৫০ হাজার ডলার লেনদেন হয়। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে দিল্লিতে সম্ভাব্য আইএস হামলার ব্যাপারে সাবধান করা হয়েছিল। দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসাজশ খুঁজে পান গোয়েন্দারা।

এই সময়েই আইএস সার্কিটে ঢুকে পড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বেশ কিছু টেলিফোনে আড়ি পেতে সন্দেহভাজন জঙ্গির দিল্লিতে পৌঁছোনের সময় জেনে নেওয়া হয়। এরপর একজনকে বেছে নেওয়া হয় তার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর জন্য।

সেই বন্ধুই ওই আফগানের জন্য লাজপতনগরের অ্যাপার্টমেন্ট দেখে দেন। যদিও শুরুতে তার থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল তিনতলায়, পরে তা বদলে দেওয়া হয় নিচের তলায়।

ভারতীয় সেই গোয়ন্দার উপরেই দায়িত্ব বর্তায় দিল্লি হামলার জন্য বিস্ফোরকের বন্দোবস্ত করার। এই সময়েই সমস্ত দফতর একযোগে লাজপত নগরের বাড়িটির উপর নজর রাখা শুরু করে।

আইএসের ওই জঙ্গি হামলার জন্য যে সব জায়গায় প্রাথমিক ভাবে পরিদর্শন করেছিল, তার মধ্যে রয়েছে দিল্লি বিমানবন্দর, আনসাল প্লাজা মল, বসন্ত কুঞ্জ মল, এবং সাউথ এক্সটেনশন মার্কেট। এই সমস্ত ব্যাপারের খোঁজখবরই পৌঁছে যেত তার আফগান হ্যান্ডলারদের কাছে।

নির্দিষ্ট দিন ভোরবেলা ওই আফগান জঙ্গির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় সমস্ত বিস্ফোরক। তবে তাতে কোনও ট্রিগার ছিল না।

আইএসের এই জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে ভারতীয় কাউন্টার ইন্টালিজেন্সের কর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মার্কিন গোয়েন্দারাও। তার স্বীকারোক্তি থেকেই মার্কিনরা আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে বেশ কিছু তালিবান ঘাঁটি চিহ্নিত করে আক্রমণ করতে পেরেছে এই স্বীকারোক্তির সাহায্যেই, জানিয়েছে একটি সূত্র।

national news IS
Advertisment