মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ প্রাক্তন নৌসেনার সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে দেখা করার অনুমতি দিয়েছে কাতার সরকার। বন্দি নৌসেনাদের জীবনহানি নিয়ে চরম আশঙ্কার মধ্যেই এমন সুখবর শোনাল বিদেশ মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিওপি২৮ সম্মেলনের ফাঁকে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তার কয়েকদিন পরই বিদেশ মন্ত্রক জানাল যে কাতারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নৌসেনার প্রাক্তন আট কর্মীর কাছে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ওই প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীদেরকে গ্রেফতার করেছে কাতার পুলিশ।
এই ব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বৃহস্পতিবার বলেছেন যে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ৩ ডিসেম্বর (রবিবার) কারাগারে ওই প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছিলেন। নয়াদিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই ব্যাপারে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র একথা জানান। বাগচি বলেন, 'আপনারা দেখেছেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিওপি২৮-এর ফাঁকে দুবাইতে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা সামগ্রিকভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেছেন।' বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, ভারত সরকার গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। আর, ধৃত প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীদের প্রতি সমস্তরকম আইনি এবং কূটনৈতিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বাগচি জানান, ২৩ এবং ৩০ নভেম্বর দুটি আবেদন জমা পড়েছে। একটা বন্দিদের পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। অপর আবেদনটি ভারত সরকার করেছে। বাগচি বলেন, 'ডিসেম্বরের ৩ তারিখে আমাদের রাষ্ট্রদূত কারাগারে ৮ বন্দির সঙ্গে দেখা করার জন্য কূটনৈতিক সুবিধা পেয়েছিলেন। এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়। আমরা গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখব। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যতটুকু ভাগ করে নেওয়ার, করব।' বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এর আগে বন্দি প্রাক্তন নৌসেনাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে সরকার এই মামলাকে 'সর্বোচ্চ গুরুত্ব' দিচ্ছে। বন্দিদের পরিবারগুলো ইতিমধ্যেই কাতারের আমিরের কাছে করুণার আবেদন পেশ করেছেন।
আরও পড়ুন- বাংলায় বন্দে ভারত নিয়ে বিভ্রান্তি জারি, এবার মুখ খুলল রেল
ধৃত প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীরা প্রত্যেকেই দোহাক একটি সংস্থায় কাজ করত। তাঁদের ২০২২সালের আগস্টে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আগে জানিয়েছিল, কাতারি কর্তৃপক্ষ এখনও বন্দিদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া কোনও অভিযোগ প্রকাশ করেনি। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের একটি প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয়েছে যে, আট ভারতীয়র বিরুদ্ধে ইজরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছিল। গ্রেফতার হওয়া ভারতীয়রা প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীরা হলেন- ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্রকুমার ভার্মা, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ট, কমান্ডার অমিত নাগপাল, কমান্ডার পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, কমান্ডার সুগুনাকর পাকালা, কমান্ডার সঞ্জীব গুপ্ত ও নাবিক রাগেশ। এই প্রাক্তন নৌকর্মীদের দাহরা গ্লোবাল সংস্থা কাজে নিযুক্ত করেছিল।