রাশিয়া-ইউক্রেনের সংকটময় পরিস্থিতিতে যখন দেশ ছাড়ার হিড়িক ভারত সহ সকল দেশের পড়ুয়াদের। এমনকী ইউক্রেনীয়রাও যখন রুশ আগ্রাসনের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন সেই সময়, যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে কর্মরত ভারতের দুই মিশনারিজ অফ চ্যারিটি (এমসি) সন্ন্যাসিনী জনগণের সেবা করার জন্য ইউক্রেনে না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ইউক্রেনে আর্তদের পাশে থেকে তাদের সেবার কাজে নিজেদের উৎসর্গ করতে চান মিজোরামের দুই সন্ন্যাসিনী, সিস্টার রোসেলা নুথাঙ্গি এবং সিস্টার অ্যান ফ্রিডা। ইতিমধ্যেই তাঁদের নিরাপদে আইজলে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন এবং জানান, এই মুহূর্তে কোন মতেই তাঁর ইউক্রেন ছাড়তে পারবেন না।
অসহায় মানুষের সেবাই এই মুহূর্তে সব থেকে বড় কাজ। দুই সিস্টারের এই সাহস এবং আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে উত্তরপূর্ব রিজিওন্যাল বিশপস কাউন্সিলের সভাপতি আর্চবিশপ জন মুলাচিরা বলেন, তাঁদের এমন সিদ্ধান্তে আমি অবাক নই। মানুষের বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ানোই গির্জার প্রকৃত উদ্দেশ্য। সেই উদাহরণই তুলে ধরলেন তারা। তাদের এমন সিদ্ধান্তে আমি গর্বিত।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন ভারত সরকারের দেশে ফেরানোর প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছেন তাঁরা।শনিবার দিনের শুরুতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। দুটি অবরুদ্ধ শহরের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রবল গোলাবর্ষণে উধাও পরিবহণ, সুমি-র পড়ুয়াদের নিয়ে উদ্বিগ্ন বিদেশ মন্ত্রক
ইউক্রেনে সাময়িক যুদ্ধবিরতি উঠতেই আরও বেশি আক্রমণাত্মক রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ইউক্রেনে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ আবার শুরু হয়েছে।রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে আরও বলা হয়েছে, ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ান সেনার আক্রমণে বেশ কয়েকটি শহর দখলে এসেছে। ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রুশ বাহিনী গুলি করে নামিয়েছে চারটি ইউক্রেনীয় Su-27 জেট।
অন্যদিকে, TASS নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ান বাহিনী স্থলপথে চালানো হামলায় ৬৯টি বিমান ধ্বংস করেছে। একইভাবে আকাশপথে হামলা চালিয়ে ২১টি বিমান ধ্বংস করা হয়েছে। শনিবার রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি চলাকালীন কিছু ভারতীয় ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্তের দিকে যেতে পেরেছিলেন।
রাশিয়ার সঙ্গে থাকা পূর্ব সীমান্তে কেউই যেতে পারেননি। এদিকে, ইউক্রেনে আটকে থাকা নাগরিকদের ফেরাতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবারও ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।