সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশনের শেষ পর্ব। বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিল ২৯ জানুয়ারি আর শেষ হয়েছিল ১৯ ফেব্রুয়ারি। আগামি দিনে বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেবে একাধিক রাজনৈতিক দল। তাই খানিকটা বিরোধীশূন্য সংসদে বাজেট অধিবেশনের শেষ ভাগ অনুষ্ঠিত হবে। এমনটাই সংসদ সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, এই পর্বে বাজেটে ঘোষণা করা একাধিক বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি ফিনান্স বিলে থাকা কর কাঠামোর সরলীকরণ নিয়ে আলোচনা হবে।
চলতি বছর বাজেট অধিবেশন শেষ হবে ৮ এপ্রিল। তার আগে ঝুলে থাকা কয়েকটি বিল পেশের সম্ভাবনা আছে এই পর্বে।.যে যে বিলগুলোকে প্রাধান্যে রাখা হয়েছে, সেগুলো—সংশোধিত পেনশন ফান্ড রেগুলেটরি এবং ডেভলপমেন্ট অথরিটি, ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর ফিনান্সিং এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং ডেভলপমেন্ট বিল, সংশোধিত বিদ্যুৎ বিল, ক্রিপ্টো কারেন্সি এবং রেগুলেশন অফ ডিজিটাল কারেন্সি বিল।
মার্চ-এপ্রিল জুড়ে ভোটমুখী আবহ থাকবে দেশের ৫টি রাজ্যে। বাংলা, অসম, কেরল, তামিলনাড়ু আর পুদুচেরিতে। আর এই পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে ৩টি রাজ্যে বিজেপি বিরোধী দল কিংবা সংখ্যালঘু দল। ফলে এই রাজ্যের শাসক দল জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধী বিজেপি বলে পরিচিত। যদিও তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকে এনডিএ ঘনিষ্ঠ দল হিসেবে পরিচিত। কিন্তু আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জনমত সমীক্ষার বিচারে দক্ষিণের সেই রাজ্যে ক্ষমতা দখলে ইঙ্গিত ডিএমকে-কংগ্রেস জোটের। ফলে বাজএট অধিবেশন চলাকালীন ভোট প্রচারও বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে, ২৯ জানুয়ারি বাজেট অধিবেশনের প্রথম দফা শুরু হলেও। পয়লা ফেব্রুয়ারি পেশ করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাজেট। সেই বাজেটের ইতিমধ্যে সমালোচনায় সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্য বিরোধী দলগুলো। বাজেট ঘোষণার দিন কেন্দ্রীয় বাজেটের সমালোচনায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘অপেক্ষা করুন আবার দাম বাড়বে। তিনি বলেন, জ্বালানিতে সেস বসিয়েছে। সেস আপনাদের শেষ করে দেবে। নীলকরের মতো, জিজিয়া করের মতো সেসের টাকা তুলে নিয়ে চলে যায় কেন্দ্র।’ তিনি এই বাজেটকে কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘ভেকধারী সরকারের ফেকধারী বাজেট।’ তিনি আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়ে বলেন, ‘দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। আর এদিকে দেশপ্রেমের কথা বলছে। কোনওদিন সব বেছে দিয়ে দেশ ছেড়ে পালাবে কে জানে!’ তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রের কারও চাকরি সুরক্ষিত নয়। কারণ সব বিক্রি করে দিচ্ছে। রেল, সেল, বিএসএনএল, কোল সব বিক্রি।’
বাজেটে এ রাজ্যে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। যাকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘তোমরা আবার কী করবে? আমরা তো করে দিয়েছি। সবটাই রেডি আছে। নতুন করে কলকাতা শিলিগুড়ি কী করবে? বাঙালকে হামাগুড়ি শেখাচ্ছো?’
পাশাপাশি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদ পি চিদাম্বরম বলেছেন, জাতীয় সম্পদ বেচে দেওয়ার এই বাজেট। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের বাজেটের সমালোচনা করে রাহুল গান্ধি বলেন, “দেশের সম্পদ মোদিজি তাঁর কর্পোরেট বন্ধুর কাছে বেচতে এই বাজেট।” প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘এই বাজেটে হয়তো মাথা আছে কিন্তু কোন হৃদয় নেই। পরিকাঠামো উন্নয়নে যে ব্যাপক বরাদ্দ করা হয়েছে, ঠিক সেই পরিমাণ বরাদ্দ গরিব, শ্রমজীবী, কৃষক, মধ্যবিত্তের উন্নয়নে প্রয়োজন ছিল।’