Advertisment

ইউক্রেন পেরোলেও অর্থাভাবে রোমানিয়ায় আটকে ২,০০০ ভারতীয়

দেশে ফেরাটাই এখন সায়নদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Sayan Chowdhury

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে পড়েছিলেন কলকাতার পড়ুয়া সায়ন চৌধুরি। আতঙ্কের অভিজ্ঞতা জানালেন নিজের মুখে। শুধুমাত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায়।

কলকাতা: ইউক্রেন যুদ্ধ যেন পদে পদে দুর্ভাগ্যকে সঙ্গী করে এনেছে। সীমান্ত পেরিয়ে রোমানিয়ায় প্রবেশ করা ভারতীয়রা সেকথা পদে পদে উপলব্ধি করছেন। ডাক্তারির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কলকাতার সায়ন চৌধুরীও আছেন সেই দলে।

Advertisment

তাঁর সৌভাগ্য, যুদ্ধের বীভত্সতা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। ইউক্রেন ছেড়ে পালাতে পেরেছেন। অনেক বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে ঢুকে পড়েছেন রোমানিয়ায়। কিন্তু, তারপর! এই তারপর যে দেশে ফেরা না, তা সায়নদের প্রতিটা মুহূর্তই দুর্ভোগ উপহার দিয়ে বুঝিয়ে ছাড়ছে।

বিদেশ মন্ত্রক ভারতীয়দের আনতে বিমান পাঠিয়েছে। কিন্তু, সেই বিমান আছে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে। ছাড়বেও সেখান থেকেই। আর, সায়নরা সিরেট সীমান্তের কাছে। সেখান থেকে ত্রাণশিবির, অর্থাত্ 'সালা দে স্পোর্ট মিলাসৌতি' যেতে বাসে চাপতে হয়। বাস ২৩ ইউরো চেয়েছিল। কোনওমতে প্রাণ বাঁচিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পালানো সায়নদের অনেকের কাছে সেই অর্থ নেই।

তাই গোটা দিন বিনামূল্যের বাসে চাপার জন্য তাঁদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সায়নরা পৌঁছেছেন ত্রাণশিবিরে। কিন্তু, পৌঁছে শুনেছেন বিশেষ বিমান যা ভারতীয়দের নিয়ে দেশে ফিরছে, তাঁদের না-নিয়েই চলে গিয়েছে। কারণ, তাঁরা সময়মতো পৌঁছতে পারেননি।

এরপর ত্রাণশিবিরে রাত ৯টা থেকে শুরু হয় অপেক্ষা। কখন বিদেশ মন্ত্রকের লোকজন তাঁদের নিয়ে যাবেন বুখারেস্টে, তার। কারণ, ত্রাণশিবির থেকে বুখারেস্ট যেতেও বাস ছাড়া গতি নেই। সীমান্ত দিয়ে ঢোকার সময় রোমানিয়ার বেশ কয়েকজন তাঁদের বলেছিল, ভারতীয় দূতাবাস তাঁদের ত্রাণশিবিরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বলেছে। সেইমতো সায়নরা ওই সব ব্যক্তিদের বাসে চেপেছিলেন।

কিন্তু, সেই সব বাসের লোকজন এখন তাঁদের কাছে ত্রাণশিবিরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অর্থ চাইছে। ত্রাণশিবিরে পৌঁছে সায়ন দেখেন, তিনি একা নন। তাঁর মতো প্রায় ২,০০০ ভারতীয় শিবিরে। তাঁদের একমাত্র ভরসা সঙ্গে বয়ে আনা খাবার। আর, ভারতীয় দূতাবাসের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পুরনো আশ্বাস।

বিদেশ মন্ত্রকের লোকজন পৌঁছে বাসের লোকজনকে অর্থ দেবেন। একথা বলে ওই বাসমালিকদের সায়নরা ঠেকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু, সেটা কতক্ষণ পারা যাবে, তা তাঁরা জানেন না। ত্রাণশিবিরে আবার বিদ্যুতের অভাব। যার ফলে দ্রুত শেষ হয়ে গিয়েছে সায়নদের মতো অনেকেরই মোবাইলের চার্জ।

মোবাইল ফের চার্জ দেওয়ার উপায় ত্রাণশিবিরে নেই। তাহলে, কীভাবে তাঁদের সঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের লোকজন যোগাযোগ করবেন! কীভাবেই বা তাঁরা দেশে ফিরবেন! সেসব এখন কার্যত ভগবানের ভরসায় ছেড়ে দিয়েছেন কলকাতার এই পড়ুয়ার মতোই রোমানিয়ায় আটকে থাকা অনেক ভারতীয়ই।

Ukraine Crisis
Advertisment