Advertisment

পর পর চিতার মৃত্যু, পরিকল্পনার ত্রুটি? কী জানাচ্ছেন নামিবিয়ার চিতা বিশেষজ্ঞরা

চিতা প্রকল্পের অধীনে, নামিবিয়ান এবং দক্ষিণ আফ্রিকান চিতাগুলিকে প্রথমে কোয়ারেন্টাইনে, তারপর বড় ঘেরে এবং এখন খোলা বনে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
cheetahs, cheetahs from south africa, Kuno national park, 12 cheetahs, MoU for cheetahs," />

মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে একের পর এক চিতার মৃত্যু প্রশ্ন তুলেছে ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে। গত তিন মাসে প্রাপ্তবয়স্ক চিতা ও শাবক মিলিয়ে মোট ৬টি চিতার মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisment

এরপরেই এক সাংবাদিক সম্মেলনে মধ্যপ্রদেশের বনমন্ত্রী বিজয় শাহ জানিয়েছেন, 'কুনোতে ২২ থেকে ২৩ টির বেশি চিতা থাকতে পারে না। চিতাগুলিকে গান্ধী সাগর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে স্থানান্তরিত করার কথা ভাবা হচ্ছে।' জুনের মধ্যে মুক্ত হবে আরও ৭টি চিতা। ছুটবে কুনো জাতীয় উদ্যানের খোলা জঙ্গলে। আরও সাতটি চিতাকে জুন মাসে মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানের খোলা জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। একের পর এক চিতার মৃত্যুর মধ্যে এই খবর নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রের উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি জানিয়েছে যে জুন মাসে পার্কে সাতটি চিতা ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

কুনো পার্কের উন্মুক্ত জঙ্গলে এখন চিতার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাতটিতে। ন্যাশনাল পার্কের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (ডিএফও) প্রকাশ কুমার ভার্মা জানিয়েছেন যে দক্ষিণ আফ্রিকার তিন-চার বছর বয়সী নিরভাকে রবিবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় কেএনপির একটি বড় ঘের থেকে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সাতটি চিতা মুক্ত পরিসরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, আর ১০টি চিতা এখনও একটি বড় ঘেরে রাখা হয়েছে। চিতা প্রকল্পের অধীনে, নামিবিয়ান এবং দক্ষিণ আফ্রিকান চিতাগুলিকে প্রথমে কোয়ারেন্টাইনে, তারপর বড় ঘেরে এবং এখন খোলা বনে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। টাস্কফোর্স কমিটিসহ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের পরই তাদের খোলা অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এখন আরও সাতটি চিতা খোলা অবস্থায় ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে।

ভারতে চিতাদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা প্রজেক্ট চিতা-এর অধীনে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর নামিবিয়া থেকে চিতাদের কুনো ন্যাশানাল পার্কে আনা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই চিতাগুলিকে ঘেরে ছেড়ে দিয়েছিলেন। এর পরে, এই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সাতটি পুরুষ এবং পাঁচটি মহিলা সহ ১২টি চিতাকে কুনো ন্যাশানাল পার্কে আনা হয়।

এদিকে একের পর এক চিতার মৃত্যু নিয়ে সরকার ও প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। তিনি জানিয়েছেন গান্ধী সাগর অভয়ারণ্যে চিতাদের স্থানান্তরিত করার বিষয়ে ইতিমধ্যেই ভাবনা চিন্তা চলছে। কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতা শাবকের মৃত্যুর পর থেকেই অনেকেই চিতাদের স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন। তবে সরকার ও প্রশাসন প্রতিনিয়ত তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। মধ্যপ্রদেশে পৌঁছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব গান্ধী সাগর অভয়ারণ্যে চিতা স্থানান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সোমবার রাজধানী ভোপালে কুনোতে চিতার মৃত্যু ও চিতা প্রকল্প নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। অনেক বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি এতে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। এ সময় কর্মকর্তাদের কাছে প্রকল্পের রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজের সঙ্গে চিতা প্রকল্পের পর্যালোচনা করেছেন। বৈঠকের পর তিনি চিতাদের রাজস্থানে স্থানান্তর নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটান। ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, 'রাজস্থানে চিতাদের পাঠানো হবে না। তাদের গান্ধী সাগর অভয়ারণ্যে স্থানান্তরিত করা হবে'।

এদিকে চিতার মৃত্যু নিয়ে চিতা গবেষণা প্রকল্পের একজন গবেষক ডক্টর বেটিনা ওয়াচটার বলেন, 'নামিবিয়ায়, চিতা যে স্থানে ছিল সেই স্থান ছিল অনেকটা বড় এবং শিকারের ঘনত্ব কম, পূর্ব আফ্রিকার অঞ্চলগুলি ছোট এবং শিকারের ঘনত্ব বেশি - তবে অঞ্চলগুলির মধ্যে দূরত্ব স্থির এবং এর মধ্যে কোনও নতুন অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয় না৷ কুনোতে পুনঃপ্রবর্তন পরিকল্পনার জন্য, এই দূরত্বগুলি উপেক্ষা করা হয়েছিল,” তিনি আরও বলেন, 'চিতার ঘনত্ব শুধুমাত্র খাবারের প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে না'।

Kuno National Park
Advertisment