শেখার তাগিদ! ভারতে এক রোহিঙ্গা তরুণী তার স্বপ্ন পূরণ করলেন, নিজের নাম, বাড়ি এবং দেশ বদল করলেন, কিন্তু লক্ষ্য নয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে অনন্য নজির হয়ে থাকলেন তাসমিদা জোহার। যদি একজন মানুষের কিছু করার বা শেখার তাগিদ থাকে তবে তিনি তা অর্জন করেই ছাড়বেন, এমনই প্রবাদের বাস্তব নির্দশন গড়ে ইতিহাস তৈরি করেছেন বছর ২৪-এর তাসমিদা জোহর।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হয়ে ইতিহাস গড়লেন এই রোহিঙ্গা তরুণী। বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের মাত্র ৩ শতাংশ’ই উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন। আর এই ৩ শতাংশে মধ্যেই মহিলা হিসাবে নিজের নাম তুলে ইতিহাস গড়লেন এই শরণার্থী তরুণী। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তার গ্রাজুয়েশান সম্পুর্ণ করেন। এরপর উইলফ্রিড লরিয়ার ইউনিভার্সিটি, টরন্টো থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পুর্ণ করতে অপেক্ষা করে রয়েছেন তিনি।
পড়াশুনার জন্য তাসমিদাকে তার নাম বদল করতে হয়েছিল, তার বাড়ি এমনকি পড়াশোনার জন্য তার ‘দেশ’ও বদল করতে হয়েছিল। নতুন ভাষা শিখেছে, নতুন সংস্কৃতিতে বাঁচতে শিখতে হয়েছে স্রেফ লেখাপড়ার তাগিদেই, অবশেষে স্বপ্ন পূরণ! নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ভারতে এসেছিলেন।চেয়েছিলেন মাথা উঁচু করে বাঁচতে। ২০২২সালের ডিসেম্বরে, তিনি প্রথম রোহিঙ্গা হিসাবে তিনি তার স্নাতক সম্পুর্ণ করেন। এখন তিনি উইলফ্রিড লরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, থেকে তিনি তার উচ্চশিক্ষা শেষ করতে লক্ষ্যে অবিচল।
আরও পড়ুন: < জঙ্গি দমনে ‘ওস্তাদ’, ‘ফ্রন্ট লাইন কমব্যাট ইউনিটের’ দায়িত্বে মহিলা বায়ুসেনা আধিকারিক >
তাসমিদা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, তার আসল নাম তাসমিন ফাতিমা, বয়স আসলে ২৪ বছর। রোহিঙ্গা হিসাবে বেঁচে থাকার যন্ত্রণার কথা তুএলে ধরেন তিনি, তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলেও ভোট দিতে পারি না। দশম শ্রেণীতে শীর্ষস্থানে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও আমাদের নাম মেধাতালিকায় আসে না। স্কুলে আলাদা ক্লাস, আলাদা বসার জায়গা। সরকারি চাকরিতে নেই কোন সুযোগ সুবিধা। সব মিলিয়ে এক রোহিঙ্গা হিসাবে বেঁচে থাকা যেন এক নরক যন্ত্রণা’! নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ভারতে এসে ইতিহাস গড়লেন এই তরুণী।