ইন্দোনেশিয়ার মিনাহাসা উপদ্বীপে বিধ্বংসী ভুমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে এবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল ভারতীয় বায়ুসেনা। আজ বায়ুসেনার C-130J এবং C-17 বিমান রওয়ানা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে। সঙ্গে আছে খাবার, জেনারেটর, টেন্ট, ওষুধপত্র, হাসপাতালের চিকিৎসা সামগ্রীর মতো একাধিক জিনিসপত্র।
একটি C-130 তে ৩৭ জন চিকিৎসা কর্মী হিন্দন থেকে চেন্নাই যাচ্ছেন, সেখান থেকে যাবেন কুয়ালানামু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, এবং সেখান থেকে ইন্দোনেশিয়ার পালু শহরে। মেডিক্যাল দলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন দশদিন স্বনির্ভরভাবে থাকার ব্যবস্থা রাখে। দিল্লির পালামে একটি C-17 ত্রাণসামগ্রী ভরা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৬ টন ওষুধ। বিমানটি চেন্নাই থেকে উড়ে গেছে ইন্দোনেশিয়ার মাকাসারে।
চারদিনের ব্যবধানে দুবার ভূমিকম্পের কবলে পড়ল ইন্দোনেশিয়া। মঙ্গলবার সকালে ফের ইন্দোনেশিয়ার সুম্বা দ্বীপে কম্পন অনুভূত হয়। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, সুম্বা দ্বীপের ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে অনুভূত হয় কম্পন। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৯। প্রথম কম্পনের মিনিট ১৫ পরেই ফের কেঁপে ওঠে সুম্বা। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কের সৃষ্টি হয় এলাকায়, ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন পর্যটকরা৷ দ্বিতীয় কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.০। তবে এই দুই কম্পনের ফলে আপাতত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কোনওরকম সতর্কতাও জারি হয়নি।
এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে ভূকম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৫। কম্পনের রেশ কাটতে না কাটতেই সুনামি আছড়ে পড়ে সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে। প্রায় ২০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছায় সুনামির ঢেউ। এতে ব্যপকভাবে বিপর্যস্থ হয় সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহর। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। সম্প্রতি পাওয়া খবর অনুযায়ী ৮৪৪ থেকে বেড়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,২৩৪ জন।
আরও পড়ুন: শেষ বিমানের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করে ভূমিকম্পে মৃত ইন্দোনেশিয়ার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার
সুলাওয়েসির দক্ষিণে মাত্র ১০০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত সুম্বা দ্বীপ। গত শুক্রবারই ভয়াবহ ভূমিকম্পের মুখে পড়তে হয়েছিল ইন্দোনেশিয়াকে। বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছিলেন আবারও ভূমিকম্প হতে পারে ইন্দোনেশিয়ায়। প্রসঙ্গত, এয়ারনাভ ইন্দোনেশিয়ার কর্পোরেট সেক্রেটারি জাকার্তা পোস্টকে জানিয়েছিলেন, পালুতে ভূমিকম্প যখন অনুভূত হয়, সে সময়ে এটিসি টাওয়ারের পাঁচতলায় ছিলেন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার আন্তোনিয়াস গুনওয়ান আগুং। টাওয়ারের ছাদ ভেঙে যাওয়ার ফলে বিমান টেক অফ করার পর তিনি টাওয়ার থেকে ঝাঁপ দেন, তাঁর হাত, পা ও পাঁজরে আঘাত লাগে। তার মিনিট কুড়ির মধ্যেই মারা যান আগুং।