১৮৯ জন যাত্রী নিয়ে সোমবার সকালে সুমাত্রা দ্বীপের কাছে সমুদ্রে ভেঙে পড়ল ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ার প্যাসেঞ্জার বিমান, এমনটাই জানাচ্ছে সে দেশের অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী সংস্থা। বিমানটি জাকার্তা থেকে পাংকল পিনাং-এ যাচ্ছিল। সুমাত্রা দ্বীপ পেরনোর কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিমানটি ভারসাম্য হারিয়ে সমুদ্রে ভেঙে পড়ে। রাজধানীর বন্দর থেকে ছাড়া একটি টাগবোটের চোখের সামনে এই বিপর্যয়টি ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার পরিবহন নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির এক সদস্যের মতে, বিমানটির বিপর্যয়ের কারণ এখনই বোঝা যাচ্ছে না। বিমানের 'ব্ল্যাক বক্স' উদ্ধার হলে তবেই এই দুর্ঘটনার কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিমানে উপস্থিত ১৮৯ জনের মধ্যে ৩টি শিশু-সহ ১৮১ জন যাত্রী, ৬ জন বিমানকর্মী এবং ২ পাইলট। লায়ন এয়ারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই উড়ানের পাইলট এবং সহকারী পাইলট সর্বোমোট ১১ হাজার ঘন্টা বিমান চালিয়েছেন অতীতে।
সূত্রের খবর, বিমানটির উড়ানের ১৩ মিনিট পর থেকেই সেটির সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। সে দেশের জাতীয় শক্তি সংস্থা পারটামিনার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বিমানের আসন-সহ সমতল থেকে ভাঙ্গা ধ্বংসাবশেষ জাভা সাগরের তীর সংলগ্ন এলাকায় দেখা গিয়েছে। তবে এখনও কেউ বেঁচে রয়েছেন কি না তা সঠিকভাবে বলতে পারছেন না অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিভাগের প্রধান মহম্মদ সিআওগি। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি যে কতটা করুণ এবং হাতের বাইরে তা বোঝা যাচ্ছে এই ব্যক্তির কথাতেই। সিআওগি বলছেন, "আমরা কেবল আশা এবং প্রার্থনা করতে পারি, কিন্তু, নিশ্চিতভাবে কিছুই বলতে পারছি না..."। লায়ন এয়ার গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ এডওয়ার্ড সিরেট বলেছেন, "এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করব না, আমরা সবরকম তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছি"।
দুর্ঘটনার পর ইতিমধ্যে ৩০০ উদ্ধারকারী কাজে নেমেছে। যেখান থেকে বিমানটির যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, তার ৩০-৩৫ মিটারের মধ্যে হেডফোন এবং লাইফ ভেস্টের মতো কয়েকটি জিনিস জলে ভাসতে দেখা গিয়েছে বলে জানাচ্ছে এয়ার ট্রাফিকিং সার্ভিসের ফ্লাইট র্যাডার ২৪।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার সিরাবয়া থেকে সিঙ্গাপুরগামী এয়ার এশিয়ার বিমান বিপর্যয়ে ১৬২ জনের মৃত্যুর পর এ দিনের দুর্ঘটনাকেই সবথেকে মর্মান্তিক বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।