ইন্দোনেশিয়ায় সুনামিতে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। উদ্ধারকারী দল রবিবার ভেঙে পড়া বাড়ির মধ্যে আটকে পড়া মানুষের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষের মধ্যে থেকে আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। দুদিন আগের ভয়াল সুনামি এবং ভয়াবহ ভূকম্প ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ায়।
ইন্দোনেশিয়ার ত্রাণ ও উদ্ধারকারী সংস্থার প্রধান মহম্মদ সায়াগি জানিয়েছেন সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে ক্ষয়ক্ষতির মাত্র সবচেয়ে বেশি। সেখানকার আটতলা হোটেল রোয়া রোয়ার মধ্যে থেকে মানুষ চিৎকার করে সাহায্য চাইছেন।
তিনি জানিয়েছেন, এখনও অন্তত ৫০ জন হোটেলের মধ্যে আটকা পড়ে রয়েছেন।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মুখপাত্র সুপোতো পুরো নুগ্রোহো জানিয়েছেন, রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে এবং টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে নির্দিষট করে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি জানিয়েছেন শুক্রবার সন্ধেয় যখন সুনামি আছড়ে পড়ে তখন পালুতে বিচ ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছিলেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ। তাঁদের কী পরণতি হয়েছে, তা এখনও অজ্ঞাত।
সুনামির আগে যে ভূকম্প হয়েছিল তার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৫। শয়ে শয়ে মানুষ আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
ভূমিকম্পের আফটারশক মাঝে মাঝেই দেখা দেওয়ায় আহতদের অনেককেই পালু-র সেনা হাসপাতালের বাইরে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
২০০৪ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিম ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে উদ্ভূত সুনামির জেরে ১২টি দেশের ২ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। গত মাসেই লোম্বোক দ্বীপে জোরালো ভূমিকম্পের জেরে মারা যান ৫০৫ জন।
প্রায় চার লক্ষ মানুষের বাসস্থান পালু শহর ভূমিকম্প ও সুনামির জেরে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভূমিকম্পের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত একটি মসজিদ সুনামিতে অর্ধেক জলের তলায় চলে গিয়েছে। একটি শপিং মল ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। একটি ব্রিজ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। মৃতদেহ অর্ধেক আচ্ছাদিত অবস্থায় শোয়ানো।
ভূমিকম্পের জেরে ধসে পড়েছিল বাড়ি ও রাস্তাঘাট। তার ওপর সুনামিতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও ঢেউয়ের উচ্চতা প্রায় ১০ ফুট ছিল বলে জানা যাচ্ছে। তার চেয়েও বেশি উঁচু ঢেউ কোনও কোনও এলাকায় দেখা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ না থাকার কারণে ত্রাণের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আফটার শকের ভয়ে বহু মানুষ বাড়ির বাইরে রাত কাটাচ্ছেন।