উত্তরপ্রদেশের পিলভিট জেলার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রার্থনায় জাতীয় সঙ্গীতের পরিবর্তে গাওয়া হচ্ছে ধর্মীয় গান, এমনই অভিযোগে অভিযুক্ত বিশালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারকান আলির উপর থেকে 'মানবিকতার খাতিরে' অস্থায়ীভাবে তুলে নেওয়া হল সাসপেনসনের নির্দেশ। জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত তদন্তে দেখা গিয়েছে, বিদ্যালয়ে প্রার্থনার সময় কখনই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়নি। প্রসঙ্গত, ‘সারে জাহাসে আচ্ছা হিন্দুস্থান হামারা’র স্রষ্টা ইকবাল রচিত ‘লাব পেয়ে আতি হ্যায় দুয়া’ গানটি প্রার্থনায় গাইত পড়ুয়ারা, এমনটাই খবর। জাতীয় সঙ্গীতের পরিবর্তে কেন 'ধর্মীয় গান' গাওয়া হবে, এই প্রশ্ন তুলেই প্রতিবাদে সরব হয়ে আন্দোলন শুরু করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তদন্তে প্রশ্ন ওঠে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা নিয়ে। এর জেরেই প্রশাসন ওই সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারকান আলিকে সাসপেন্ড করে।
আরও পড়ুন- দিল্লির অবৈধ কলোনির বাসিন্দাদের জন্য ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্ত মোদী সরকারের
১৪ অক্টোবর স্থানীয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা অভিযোগ করেন, ফারকান আলি প্রার্থনার সময় ছাত্রদের মাদ্রাসায় যে নমাজ পড়া হয়, সেই নমাজ পড়তে করতে বাধ্য করেছেন। এরপরই প্রশাসন সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করে ফারকান আলিকে। এমনকী ঘটনার তদন্ত করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বৈভব শ্রীবাস্তবের নির্দেশে ২১ অক্টোবর সিটি ম্যাজিস্ট্রেট রিতু পুনিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বন্দনা ত্রিবেদী এবং বিএসএ দেবেন্দ্র স্বরূপকে নিয়ে তিন সদস্যর একটি তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়।
কিন্তু, বিশালপুরের ব্লক এডুকেশন অফিসার (বিইও) উপেন্দ্র কুমারের তদন্তে দেখা যায়, ১৯০২ সালে রচিত মহম্মদ ইকবালের ‘লাব পেয়ে আতি হ্যায় দুয়া’ গাওয়া হয়েছিল প্রার্থনাতে। উল্লেখ্য, মহম্মদ ইকবালই 'সারে জাঁহা যে আচ্ছা' গানটির রচয়িতা। তবে জেলা প্রশাসনের জারি করা রিপোর্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে কথোপকথনে জানতে পারা যায় যে ওই স্কুলটিতে কখনও জাতীয় সঙ্গীত কিংবা সরকার নির্ধারিত সঙ্গীত 'ও শক্তি হামে দো দয়ানিধি' গানগুলি গাওয়া হয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, "পড়ুয়ারা জানায় তাঁরা 'ল্যাব পে আতি দুয়া' ছাড়া কোনও জাতীয় সঙ্গীত বা অন্য গান গায়নি। গত দু তিন দিন ধরে নতুন শিক্ষকরা স্কুলে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ানো শুরু করেছেন।" তদন্তে এও উঠে আসে যে যেদিন এই ঘটনাটি ঘটেছিল সেদিন মোট ২৬৭ জন ছাত্রের মধ্যে ৫৩ জন উপস্থিত ছিল বিদ্যালয়ে।
আরও পড়ুন- ‘মুসলিমদের অন্তর্ভুক্তি করলেই নাগরিকত্ব বিল সমর্থন করবেন মমতা’, বিস্ফোরক দাবি বিজেপি নেতার
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন এবং শিক্ষার মান নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে। যখন পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ইংরেজি এবং হিন্দিতে কিছু সাধারণ শব্দ লিখতে বলা হয়, তারা তা লিখতে পারেনি। পড়ুয়ারা জানায় যে তাদের কেবল মুখে মুখে পড়া শেখানো হয়। শিক্ষার্থী কেউই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর নামও বলতে পারেনি।" এমনকী পড়ুয়ারাদের শৃঙ্খলারও অভাব ছিল বলে দাবি করেছে প্রশাসনের প্রকাশিত রিপোর্টটি।
Read the full story in English