সম্মতিপূর্বক সমকাম নিয়ে কোনও অবস্থান নিল না কেন্দ্র। ৩৭৭ ধারা বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে যে শুনানি চলছে, সেখানে দেশের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শীর্ষ আদালতে জানান, ‘‘আমরা বিষয়টি আদালতের বীক্ষার উপর ছেড়ে দিচ্ছি।’’ সরকারের অবস্থান বিশদে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একটি হলফনামাও দাখিল করেছে।
শীর্ষ আদালতে এ বিষয়ক শুনানির দ্বিতীয় দিনে নিজের অবস্থান জানাল কেন্দ্র। গতকাল থেকে ৩৭৭ ধারা বাতিলের পিটিশনের উপর শুনানি শুরু হয়েছে সাংবিধানিক বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের এই বেঞ্চে তিনি ছাড়াও রয়েছেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, এ এম খানউইলকর, আর এফ নরিম্যান, এবং ইন্দু মালহোত্রা।
এ বিষয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য জানার পরে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র মন্তব্য করেছেন, ‘‘তার মানে আপনারা এ নিয়ে লড়ছেন না।’’
তবে এদিন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আদালতে বলেছেন, সমকাম বিবাহ স্বীকৃত হলে কোনও নাগরিক তাঁর ভাই বা বোনকে বিয়ে করতে চাইতে পারেন। এর উত্তরে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সে বিষয় এই বেঞ্চের বিবেচ্য নয়, শূন্যের উপর দাঁড়িয়ে এসব সওয়াল চলতে পারে না।
আরও পড়ুন, নির্ভয়া কাণ্ডে অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা বহাল রাখলেন শীর্ষ আদালত
এই মামলায় আবেদনকারীদের পক্ষে সওয়াল করছেন মেনকা গুরুস্বামী। এদিন তিনি আদালতের সামনে বলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা সংবিধানের ১৫, ১৯ ও ২১ নং অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। সংবিধানের ২১ নং ধারায় দুজন নাগরিকের যৌথতার যে অধিকার স্বীকৃত আছে, তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় লঙ্ঘিত হয় বলে মত দিয়েছেন তিনি।
আইনজীবী মেনকা গুরুস্বামী তাঁর সওয়ালে আরও বলেন, এলজিবিটি কমিউনিটির মানুষরা চিহ্নিত হয়ে যাওয়ার কারণে বহু সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। তিনি বলেন, এই মামলার মাধ্যমে শীর্ষ আদালত সমাজের নৈতিকতাকে সাংবিধানিক নৈতিকতার রূপ দিতে পারে। আগামিকাল ফের এই মামলার শুনানি হবে।
এদিকে শীর্ষ আদালতে অন্য একটি মামলায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা বজায় রাখার পক্ষে হলফনামা দাখিল করেছে কেন্দ্র। এই বিষয়ক এফিডেভিটে কেন্দ্র জানিয়েছে বিবাহের পবিত্রতা বজায় রাখার জন্যই ব্যাভিচারকে অপরাধ বলে গণ্য করা উচিত। ব্যাভিচার আইনি স্বীকৃতি পেলে বিবাহের পবিত্রতা ধূলিসাৎ হয়ে যাবে বলে মত প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। ৪৯৭ ধারায় ব্যাভিচারের জন্য কেবলমাত্র একজন পুরুষই আইনের চোখে অপরাধী হতে পারেন। মহিলারা এক্ষেত্রে নিরপরাধ। আইনের এই দিকটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছেন কেরালার এক বাসিন্দা।