কাজ দিল বিক্ষোভে। নীতি পুলিশ ইউনিটগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হল ইরান। কঠোর পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মাহসা আমিনিকে আটক করা হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইরান। দুই মাস ধরে বিক্ষোভ চলে। তারপরই নীতি পুলিশ ইউনিটগুলো বাতিল করতে বাধ্য হল তেহরান। আইআরএনআই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল মহম্মদ জাফর মনতাজরি জানিয়েছেন, নীতি পুলিশ ইউনিট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে, তিনি বাহিনীর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বা নীতি পুলিশের ইউনিট কি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হল কি না, সেই নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শুধুমাত্র মনতাজেরি বলেছেন, 'বিচার বিভাগ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কার্যকলাপ নিরীক্ষণ অব্যাহত রাখবে।' বিভিন্ন মহলের দাবি, মাহস আমিনির মৃত্যুর জেরে বিশ্বজুড়ে ইরানের নিন্দা ও বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্যেই নীতি পুলিশের ইউনিট তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তেহরান। ২০০৫ সালে ইসলামিক পোশাকবিধি লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্যই নৈতিকতা পুলিশ বা 'গাশত-ই এরশাদ' তৈরি করেছিল ইরান।
আমিনির মৃত্যুর পর, সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার বিক্ষোভে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ইরান। নীতি পুলিশের ইউনিট তোলার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের সবচেয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত। ২২ বছর বয়সি কুর্দ মহিলা আমিনির মৃত্যু শুধু ইরানই নয়। গোটা বিশ্বে রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছে। যদিও ইরান সরকারের দাবি, প্রশাসন আমিনির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেনি। কিন্তু, আমিনির পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে তাঁদের বাড়ির মেয়ের মারধরের জেরেই মারা গিয়েছে। কারণ, আটক করার পর আমিনির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে।
আরও পড়ুন- বেশ কষ্টে আছেন গুজরাটের মানেক চকের বাঙালিরা, সেটাই ফাঁস করেছেন পরেশ রাওয়াল?
প্রতিবাদে মহিলারা মাথার স্কার্ফ নেড়েছেন। তা পুড়িয়ে দিয়েছেন। এই স্কার্ফ ইরানের রক্ষণশীল পোশাকবিধির অধীনে বাধ্যতামূলক। শিল্পী এবং জাতীয় ক্রীড়াবিদরাও এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছেন। পালটা, ইরানের নীতি পুলিশ এই বিক্ষোভ দমন করতে আক্রমণের রাস্তায় হেঁটেছে। যার ফলে বেসরকারি দাবি অনুযায়ী, শত শত লোক মারা গিয়েছেন।
গত ২৯ নভেম্বর, ইরানের সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল স্বীকার করেছেন যে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ঘিরে তৈরি অস্থিরতায় ৩০০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছেন। দুই মাসের মধ্যে হতাহতের ব্যাপারে এটাই ইরানের প্রথম মুখ খোলা। বিক্ষোভকারীদের প্রতি ইরানের এই নৃশংস আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
Read full story in English