ইরানি মহিলা মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে এক নিরাপত্তা আধিকারিককে হত্যার অভিযোগে শনিবার দু জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরান। যার প্রতিবাদে সরব ইইউ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমী দেশ। সেদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার সকালে মহম্মদ মেহেদি কারামি ও সৈয়দ মহম্মদ হোসেনকে রাস্তার মাঝে ফাঁসি দেওয়া হয়। নিরাপত্তা আধিকারিককে হত্যার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহিতারও অভিযোগ আনা হয়। সেদেশের সরকারি নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে একই মামলায় অন্য তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি ১১ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সেদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, "মহম্মদ মেহেদি কারামি ও সৈয়দ মহম্মদ হোসেনকে নিরাপত্তা আধিকারিক হত্যার প্রধান অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের আজ সকালে ২ জনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে,"। দেশ জুড়ে চলতে থাকা অশান্তির জেরে চারজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
ইরানের বছর ২২-এর তরুণী কুর্দিশ মহিলা মাহসা আমিনি। পুলিশি হেফাজতে তাঁর মৃত্যুর জেরে ইরানজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রশাসন দাবি করেছে, আমিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। কিন্তু, ওই যুবতীর পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমিনি ঠিকমতো হিজাব পরেননি। সেই যুক্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ইরানে সঠিকভাবে হিজাব না-পরা দণ্ডনীয় অপরাধ। সাকেজে আমিনির শেষকৃত্যের সময় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, ব্যাপক বিক্ষোভে সামিল হন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে যে মহিলারা মাথা থেকে স্কার্ফ খুলে ফেলেছেন। আর, সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন।
সংবাদমাধ্যমকে আমিনির মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের পোশাক ঠিকঠাকই ছিল। আমিনির মা জানান, তাঁর মেয়েকে আটক করার পরই নিয়ে যাওয়া হয় ডিটেনশন সেন্টারে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় আমিনির ভাইও উপস্থিত ছিলেন। আমিনির ভাই জানিয়েছেন, যে ঘরে তাঁর বোনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল, সেখান থেকে তিনি আত্মচিৎকার শুনতে পান।
এরপরই একটি অ্যাম্বুল্যান্সকে পুলিসকর্মীরা তলব করেন। এরপরই আমিনিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, হাসপাতালে কোমায় চলে যান ওই যুবতী। হাসপাতালে আমিনির ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে যে আমিনি শয্যাশায়ী। তাঁর শরীরে নল লাগানো। কান দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। চোখে কালশিটের দাগ। পালটা ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, আমিনি আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাঁকে হিজাব আইন শেখানো হচ্ছিল।