ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা পরিস্থিতি নিয়ে ভারত তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই ধরণের পদক্ষেপ বিশ্বের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ভয়ঙ্কর বলে অভিহিত করেছে ভারত।
ইজরায়েলে ইরানের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ভারতও চিন্তিত। ইজরায়েল এবং ইরান, উভয় দেশের সঙ্গেই সুসম্পর্ক রয়েছে ভারতের। এমন পরিস্থিতিতে ভারত বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং একে সমগ্র অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বিরাট 'হুমকি' বলে অভিহিত করেছে।
পুরো পরিস্থিতির উপর গভীর নজর রাখছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে সেখান থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার বিকল্পও খোলা রেখেছে ভারত। ভারতীয় দূতাবাস ইজরায়েলে সমস্ত ভারতীয়দের শান্ত থাকার এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের জারি করা নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রোটোকল অনুসরণ করে চলার পরামর্শ দিয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়া তেল আবিবের ফ্লাইট স্থগিত করেছে
এদিকে, ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে রবিবার তেল আবিবের জন্য এয়ার ইন্ডিয়া সাময়িকভাবে বিমান পরিষেবা স্থগিত করেছে। দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত শুধু কূটনৈতিক প্রভাব নিয়েই চিন্তিত নয়, এর অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়েও চিন্তিত।
প্রভাব পড়তে পারে ভারতীয় শেয়ার বাজারে
লোহিত সাগরের অবস্থা এমনিতেই খারাপ, যার কারণে ভারতের জন্য আমদানি-রপ্তানির খরচ বেড়েছে। এই সমস্যা আরও গুরুতর হতে পারে। দ্বিতীয় প্রভাব অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ এবং দামের উপর পড়তে পারে। এ কারণে ভারতীয় শেয়ারবাজারে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই কারণেই ভারত এই দুই দেশের মধ্যে বর্তমান উত্তেজনা দ্রুত সমাধানের কথা বলেছে ভারত।
বিদেশ মন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করেছে, 'ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই ধরণের ঘটনা সমগ্র অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বিরাট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা দ্রুত উত্তেজনার অবসান, সংযম বজায় রাখতে, হিংসার বদলে কূটনীতির পথ অবলম্বনের আবেদন করছি। আমরা পুরো পরিস্থিতির উপর গভীর নজর রাখছি। আমাদের দূতাবাসগুলি সেই অঞ্চলের ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছে। এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন- PM Modi: ইরান-ইজরায়েল ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা মোদীর
ভারতীয় দূতাবাস হেল্পলাইন নম্বর জারি করেছে
বিদেশ মন্ত্রকের এই বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা পর তেহরানে ভারতীয় দূতাবাস একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। অন্যদিকে, নয়াদিল্লিতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত নাওর গিলন বলেছেন যে ইরান সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে আর্থিক সহায়তা দেয় এবং এখন তারা হামাসের সমর্থনে সরাসরি ইজরায়েলে্র উপর হামলা করেছে।
বর্তমানে ইরানের চেয়ে বেশি ভারতীয় ইজরায়েলে রয়েছেন। সরকারী সূত্র দাবি করেছে, ইরানে প্রায় পাঁচ হাজার ভারতীয় রয়েছেন। ইতিমধ্যে ১৮ হাজার ভারতীয় ইজরায়েলে রয়েছেন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তাদের সবাইকে সরিয়ে আনাই হবে সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার। গত বছরও, ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ভারত প্রায় ১৫০০ভারতীয়কে ইজরাইল থেকে সরিয়ে নেয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইজরায়েলে ভারতীয় কর্মী পাঠানোর পরিকল্পনাও স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।