রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের সলতে পাকাতে বর্তমানে দিল্লি সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই তিনি বৈঠক করলেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে। আধঘণ্টা দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হয়। তবে, বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাইরে উপস্থিত সাংবাদিকদের কিছু জানাননি। যদিও সূত্রের খবর, ফের পাওয়ারের সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমোর বৈঠক হতে পারে। সেই বৈঠকে থাকতে পারেন কংগ্রেস নেতৃত্বও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসে থাকাকালীন সময় থেকেই শরদ পওয়ার ছিলেন সর্বভারতীয় নেতা। মারাঠা নেতা পাওয়ারকে সেই কারণে ভীষণ শ্রদ্ধা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই শ্রদ্ধা থেকেই তিনি বারবার পাওয়ারের কাছে ছুটে যান। তাঁর পরামর্শ নেন। তৃণমূল সুপ্রিমোর দীর্ঘদিনের ইচ্ছা যে শরদ পাওয়ার রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হন। বর্তমান পাওয়ার মহারাষ্ট্রের শাসক জোটের আহ্বায়ক। সেই জোটে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছে হিন্দুত্ববাদী শক্তি শিবসেনাও। উভয় মতাদর্শের দুই দল মহারাষ্ট্রের শাসক জোটে স্রেফ আটকা পড়ে রয়েছেন পওয়ারের জন্যই।
সর্বভারতীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের পরিচিত মুখ শরদ পাওয়ারকে শুধু বিরোধীরাই নন। শাসক দলের নেতারাও যথেষ্ট শ্রদ্ধা করেন। এমনকী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পর্যন্ত তাঁকে 'রাজনৈতিক গুরু' বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। শুধু তাই না। গত জুনে ৮১ বছরের শীর্ষ এনসিপি নেতা পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোরও। সেই সময় বিভিন্ন মহলে খবর রটেছিল যে পাওয়ারকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে দেখতে চান কিশোর।
কিন্তু, সেই সময় পাওয়ার নিজেই তাঁর রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছিলেন। বাস্তববাদী এই নেতা সেই সময় বলেছিলেন, 'যখন একটা একক দলের (শাসক বিজেপি) ৩০০-র বেশি সাংসদ রয়েছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফল কী হতে পারে! আমি রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হব না।' কিন্তু, তিনি না-চাইলেও একবছর পর ফের দেশের এক আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের দীর্ঘদেহি নেতার নামই বারবার রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে উঠে আসছে। তিনি আর কেউ নন, মারাঠা নেতা শরদ পাওয়ার।
আরও পড়ুন- আরও চাপে যোগী প্রশাসন, ধ্বংস হওয়া বাড়ির মালিক বিক্ষোভকারী নন, প্রকাশ নথিতে
ইতিমধ্যেই অবশ্য সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ) তাদের শীর্ষনেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নাম রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ভাসিয়ে দিয়েছে। বিহারের বিরোধী পার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল বা আরজেডি আবার নাম ভাসিয়ে দিয়েছে দলের প্রতিষ্ঠাতা লালুপ্রসাদ যাদবের।
যদিও লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে এখনও বহু মামলা রয়েছে। তিনি খুব একটা বেশিদিন হল জেল থেকে বেরোননি। তা-ও আবার দুর্নীতির মামলায় জেলে যাওয়া। এমন এক নেতাকে দেশের শীর্ষ সাংবিধানিক পদে দেখায় আপত্তি রয়েছে অন্যান্য অনেক দলেরই। কিন্তু, পাওয়ারকে নিয়ে তাঁদের কোনও সমস্যা নেই।
Read full story in English