Advertisment

ইশরাত জাহান হত্যা মামলা: প্রাক্তন পুলিশ অফিসার ভানজারা ও এন কে আমিনের রেহাইয়ের আবেদন খারিজ আদালতে

সিবিআই এই মামলায় চার আইবি অফিসারকে আদালতে অভিযুক্ত করার ব্যাপারে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে অনুমোদন চেয়েছিল। সে অনুমোদন মেলেনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ইশরাত জাহান ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় ভানজারা-আমিনের রেহাইয়ের আবেদন খারিজ

ইশরাত জাহান ভুয়ো সংঘর্ষের অভিযোগের মামলায় ডিজি ভানজারা এবং এনকে আমিনের রেহাইয়ের আবেদন খারিজ করে দিল বিশেষ সিবিআই আদালত। ভানজারার বিরুদ্ধে ভুয়ো সংঘর্ষে ইশরাতকে হত্যার পরিকল্পনা করার অভিযোগ রয়েছে। গুজরাট পুলিশ ও আই বি-র অফিসারদের নিয়ে গড়া একটি যৌথদল ওই হত্যা করে বলে অভিযোগ। ভানজারা এখন জামিনে মুক্ত। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট এন কে আমিন এই মামলায় সহ অভিযুক্ত। এই মামলায় অবসরপ্রাপ্ত ডিজিপি পি পি পাণ্ডে ছাড়া পেয়ে যাওয়ার পর ভানজারা ও এন কে আমিন নিজেদের ছাড়ের জন্য আবেদন করেন।

Advertisment

পি পি পাণ্ডের সঙ্গে সমমর্যাদার যুক্তিতে ভানজারা ও আমিনকে ছাড় দিতে অস্বীকার করেছে আদালত। আদালতের মতে, এই দুই অভিযুক্তের ভূমিকা অবসরপ্রাপ্ত ডিজিপি-র চেয়ে বেশি।

সিবিআই এই দুই প্রাক্তন অফিসারকে আদালতে অভিযুক্ত করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন চেয়েছে কিনা সে ব্যাপারে  জানতে চেয়েছে আদালত। আদালত বলেছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ ধারা অনুসারে সরকারি কর্মীকে আদালতে অভিযুক্ত করার ব্যাপারে অনুমতি না পাওয়া গেলে তা আদালতকে জানাতে হবে। সিবিআই এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের অনুমোদন চায়নি।

তবে সিবিআই এই মামলায় চার আইবি অফিসারকে আদালতে অভিযুক্ত করার ব্যাপারে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে অনুমোদন চেয়েছিল। সে অনুমোদন মেলেনি। ২০১৪ সালে এই মামলার চার্জশিটে চারজন আই বি অফিসারের নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছে প্রাক্তন স্পেশাল ডিরেক্টর রাজিন্দর কুমারের নামও। সিবিআইয়ের এক ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে আদালতে আজও এই চার্জশিট ঝুলছে।

নিজের ডিসচার্জ অ্যাপ্লিকেশনে ভানজারা দাবি করেছেন যে সিবিআইয়ের চার্জশিট ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত... গুজরাটের গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়াই এর লক্ষ্য, এবং সমস্ত পরিকল্পনাই তৎকালীন ইউপিএ নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের।’’ এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও টেনে এনেছেন তিনি। ভানজারার দাবি, গুজরাটের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় জেরা করেছিল সিবিআই।

ভানজারার ছাড়ের আবেদনে লেখা হয়েছে, ‘‘তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তদন্তকারী অফিসারকে দিয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, যদিও সেসব এই মামলায় লিপিবদ্ধ নেই... ঘটনা হল তদন্তকারী দলের, (যার মধ্যে সতীশ ভার্মা নামের এক আই পিএস অফিসার ছিলেন) উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছানো এবং এই মামলায় তাঁকেও ফাঁসিয়ে দেওয়া... এই চার্জশিটের পুরোটাই বানানো।’’

আরও পড়ুন, Ishrat Jahan Case: সাদা দাড়ি ও কালো দাড়িকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল সিবিআই: আদালতে বিস্ফোরণ ভানজারার আইনজীবীর

ভানজারার দাবি এই মামলায় কোনও সাক্ষীই বিশ্বাসযোগ্য নন। ‘‘ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪(৫) ধারায় যেসব সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, তা খুবই সন্দেহজনক’’। প্রাক্তন ডিজিপি পি পি পাণ্ডেকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি এই মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে। তাঁকে রেহাই দেওয়ার অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীকে আদালতে অভিযুক্ত করার প্রয়োজনীয় অনুমোদন না থাকা, এবং বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্যের অভাব। ভানজারার দাবি, পিপি পাণ্ডের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ছিল, তার সঙ্গে সঙ্গে কমবেশি সাযুজ্য রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগেরও।

ভানজারার বক্তব্য, এফ আই আরে মোট ১৯ জন পুলিশকর্মীর নাম থাকলেও চার্জশিটে নাম রয়েছে মাত্র সাতজনের।

ইশরাতের মা শামিম কৌসের এর আগেই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকদের আবেদনের বিরোধিতা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়েছিল এবং পরে গুজরাট পুলিশের অফিসাররা তাকে হত্যা করে এবং এই হত্যাকাণ্ডকে সংঘর্ষজনিত হত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে।

২০০৪ সালের ১৫ জুন, আমেদাবাদের শহরতলিতে মুম্বইয়ের কলেজছাত্রী ১৯ বছরের ইশরাত জাহানকে হত্যা করা হয়। তাঁর সঙ্গেই হত্যা করা হয় তাঁর বন্ধু জাভেদ শেখকে। হত্যাকাণ্ডে মারা যান আমজাদি আকবরালি রানা এবং জিশান জোহর নামে আরও দুই ব্যক্তি, যাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক বলে অভিযোগ।

fake encounter
Advertisment