ইশরত জাহান হত্যার পর ১৫ বছর কেটে গেছে। অভিযোগ, ভুয়ো সংঘর্ষে এই তরুণীর মৃত্যু ঘটেছিল। এ ঘটনায় দুই প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক ডি জি বানজারা এবং এন কে আমিনকে মুক্তি দিয়েছে আমেদবাদের বিশেষ সিবিআই আদালত। ঘটে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বানজারা সে সময়ে আমেদাবারে ডিটেকশন অফ ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিসিপি ছিলেন। এন কে আমিন ছিলেন ওই বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। অব্যাহতির এই সংস্কৃতির প্রতি প্রতিবাদ জানান নিহত ইশরতের মা শামিমা কৌসের।
মঙ্গলবার ইশরতের না শামিমা কৌসের বলেন, 'বিচারের নামে এই অব্যাহতির সংস্কৃতিতে মামলা লড়ার ইচ্ছাশক্তি আমি হারিয়ে ফেলেছি। সিবিআই কোর্টের শুনানিতে আমি আর হাজিরা দেব না।' কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কোর্টে বলল ঠেলে এটাতো সিবিাইয়ের কর্তব্য যে আমার মেয়ের হত্যাকারীদের দোষী প্রমাণিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা। সিবিআই কোর্টকে লিখিতভাবে তিনি জানান, বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তবুও, তারা বহাল তবিয়তে জামিনে মুক্ত হয়ে কাজ করে চলেছে। রাজ্য সরকার তাদের সহায়তা করছে। এরপরই তাঁর সংযোজন, আমি নিশ্চিৎ যে আমার মেয়েকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভূস্বর্গে আটক ১৪৪ নাবালক, কোর্টে স্বীকার জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের
কেন মুক্তি দেওয়া হল ইশরাত জাহান হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসার ডি জি বানজারা এবং এন কে আমিনকে? কোনও সরকারি চাকুরে যদি কোনও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ ধারানুসারে সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন। গুজরাট সরকার সে অনুমোদন দিতে অস্বীকার করেছে। প্রধানত সে কারণেই এই মুক্তি।
২০০৪ সালের এক সকালে বানজারার নেতৃত্বে ডিটেকশন অফ ক্রাইম ব্রাঞ্চ ইশরত এবং আরও তিনজনকে গুলি করে হত্যা করে বলে অভিযোগ। গুজরাট পুলিশের দাবি তারা গোয়েন্দা বিভাগ থেকে খবর পেয়েছিল ওই তিনজন গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যা করতে এসেছিল। এদের মধ্যে দুজন ছিল পাকিস্তানি নাগরিক। আমেদাবাদ সিটি ক্রাইম ব্রাঞ্চ সেদিন যে এফআইআর দায়ের করেছিল, তাতে ইশরাতের পরিচয় দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছিল একজন মহিলা জঙ্গি ড্রাইভারের পাশের সিটে বসেছিল।
হাই কোর্ট নিযুক্ত বিশেষ তদন্ত দল এবং সিবিআই দুপক্ষই তাদের তদন্তে জানায় এই সংঘর্ষ ভুয়ো। সিবিআই এ ব্যাপারে গুজরাট পুলিশ এবং ইন্টালিজেন্স ব্রাঞ্চ, এই দু পক্ষকেই এ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করে। প্রথম বার এ নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয় ২০০৯ সালে, যখন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস পি তামাং এ সংঘর্ষ ভুয়ো ছিল এবং শুধুমাত্র পুরস্কার ও পদোন্নতির জন্য এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। ২০০৯ সালের অগাস্ট মাসে কেন্দ্র একটি হলফনামা দাখিল করে। যাতে ইশরাতকে লশ্কর এ তৈবা জঙ্গি হিসেবে দেখানো হয়।
Read the full story in English