আইএস মডিউলের যেসব সদস্যদের গ্রেফতার করেছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি বা এনআইএ, তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস:
মুফতি মহম্মদ সুহেল ওরফে হজরত (২৯) - এনআইএ-র অভিযোগ, এই সুহেলই গোষ্ঠীর মাস্টারমাইন্ড। সুহেল আমরোহার বাসিন্দা এবং হাকিম মহতাবউদ্দিন হাশমি রোডের এক মাদ্রাসার মুফতি। সম্প্রতি সে এসে উঠেছিল দিল্লির জাফরাবাদে, এমনটাই জানিয়েছে এনআইএ। তদন্তকারী সংস্থার বক্তব্য, বিদেশি হ্যান্ডলারের সঙ্গে সুহেল শুরুতে যোগাযোগ করেছিল ইন্টারনেটের মাধ্যমে এবং তারপর টেলিগ্রামের মাধ্যমে। সূত্র জানিয়েছে, অন্যদের এই গোষ্ঠীতে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেছিল সুহেল। এনআইএ-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “এদের অধিকাংশই জাফরাবাদ অথবা আমরোহার বাসিন্দা। এরা আগে থেকেই সুহেলকে চিনত। প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে সুহেলই এদের নির্দেশ দিত। আইইডি-র খুঁটিনাটির বিবরণ সম্পর্কিত যে ভিডিও মিলেছে, সেখানে এই সুহেলের গলাই শোনা যাচ্ছে। গ্রুপের অন্য সদস্যদের কীভাবে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংগ্রেহ করতে হবে এবং কীভাবে আইইডি এবং পাইপ বোমা বানাতে হবে, সে সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছিল সুহেল।“
আনাস ইউনুস (২৪) - দিল্লির জাফরাবাদের বাসিন্দা ইউনুস নয়ডার অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। এনআইএ-র আইজি অলোক মিত্তল জানিয়েছেন, "বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, অ্য়ালার্ম ঘড়ি এবং ব্যাটারি সংগ্রহের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যকলাপ বৃদ্ধির চেষ্টায় রত ছিল এই ব্যক্তি।"
রশিদ জাফর রক ওরফে জাফর (২৩) - জাফরাবাদের বাসিন্দা রশিদ বস্ত্র ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত। এনআইএ-র অভিযোগ, সম্প্রতি চালু হওয়া ১৩৪ টি সিম কার্ডের ব্যবস্থা করেছিল জাফর। এক অফিসার জানিয়েছেন, "ওর বন্ধুর মোবাইল ও সিম কার্ডের দোকান রয়েছে।"
সঈদ (২৮) এবং রঈস (৩০) - আমরোহার সৈদাপুর ইম্মার বাসিন্দা এই দুই ভাইয়ের একটি ঝালাইয়ের দোকান রয়েছে। এনআইএ যে রকেট লঞ্চার উদ্ধার করেছে, তা বানানো হয়েছিল এই দোকানেই, দাবি তদন্তকারী সংস্থার। এনআইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "সঈদ এবং রঈস এই দুই ভাই প্রচুর পরিমাণ (প্রায় ২৫ কিলোগ্রাম) বিস্ফোরক দ্রব্য/গান পাউডার সংগ্রহ করেছিল আইইডি এবং পাইপ বোমা বানানোর জন্য। জঙ্গি হানার জন্য রকেট লঞ্চার তৈরিতেও বড়সড় ভূমিকা নিয়েছিল এরা।"
জুবেইর মালিক (২০) এবং জাইদ মালিক (২২) - জাফরাবাদের বাসিন্দা জুবেইর দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে বিএ পড়ে। সে এবং তার ভাই জাহিদ দুজনে মিলে নিজেদের বাড়ি থেকে ৭ লক্ষ টাকার গয়না চুরি করে এবং এক মহিলার মাধ্যমে লখনউতে সেই গয়না বিক্রি করে দেয় বলে দাবি করেছে এনআইএ। এনআইএ-র বক্তব্য, এই টাকা খরচ করা হয়েছিল গ্রুপের খরচ চালানোর জন্য। এক বিবৃতিতে এনআইএ জানিয়েছে, "দুই ভাই সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্রের অংশীদারই শুধু ছিল না, ব্যাটারি, কানেক্টর, এবং জাল নথির মাধ্যমে সিম কার্ড সংগ্রহ করা এবং বোমা বানানোর সরঞ্জাম কেনার জন্য টাকাপয়সা জোগাড় করার ব্যাপারে তারা অন্যতম ভূমিকা গ্রহণ করে।"
সাকিব ইফতিকার (২৬) - উত্তর প্রদেশে হাপুরের সিম্ভাওলির বাসিন্দা ইফতিকার এই ষড়যন্ত্রে অভিযোগে আটকদের মধ্যে আরেকজন ধর্মপ্রচারক। সে বাকসারের জামা মসজিদের ইমাম। এনআইএ-র বিবৃতি অনুযায়ী, "গোষ্ঠীর মাস্টারমাইন্ড মুফতি মহম্মদ সুহেলকে অস্ত্র সংগ্রহে সাহায্য করেছিল ইফতিকার।"
মহম্মদ ইরশাদ (২৭) - ইরশাদ আমরোহার অটো রিক্সা ড্রাইভার। এনআইএ-র বিবৃতি অনুসারে, "আইডি এবং বোমা বানানোর সরঞ্জাম সুহেলকে লুকিয়ে রাখার জন্য জায়গার ব্য়বস্থা করতে সাহায্য করেছিল ইরশাদ।"
মহম্মদ আজম (৩৫) - দিল্লির গাশি মেণ্ডুর বাসিন্দা আজম। সে দিল্লির সিলামপুর এলাকায় একটি ওষুধের দোকান চালায়। এনআইএ তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, সুহেলকে অস্ত্র সংগ্রহের ব্যপারে সাহায্য করেছিল আজম।
Read the Full Story in English