Advertisment

ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যোগাযোগ: হায়দরাবাদে ধৃত ২

২০১৪ সালে হায়দরাবাদের চারজনের একটি দলের সঙ্গে বসিত বাংলাদেশ হয়ে সিরিয়া যাওয়ার ছক কষেছিল। মালদহে সীমান্ত পেরোনোর সময়ে তাকে পাকড়াও করা হয়। এবার ধৃতদের পরিকল্পনা ছিল শ্রীনগর হয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়ে, পরে সেখান থেকে আফগানিস্তান যাওয়ার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
is, আইএস

আইএসের সঙ্গে যোজসাজশের অভিযোগে দুই যুবককে পাকড়াও করল এনআইএ। ফাইল ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

আইএসের সঙ্গে যোজসাজশের অভিযোগে দুই যুবককে পাকড়াও করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। রবিবার হায়দরাবাদ থেকে ওই দুজনকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। ভারতে আইএসের হয়ে কাজ করার অভিযোগে আবদুল্লা বসিত(২৪) ও তার সহযোগী মহম্মদ আব্দুল কাদের(১৯) নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে দু’দুবার সিরিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বসিত। সিরিয়া যাওয়ার আগে এ দেশে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ধরাও পড়েছিল বসিত। আইএসের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে গত দশমাসে এই প্রথমবার কাউকে গ্রেফতার করা হল এ দেশে। ২০১৭-র অক্টোবরে একই অভিযোগে ৫ জনকে পাকড়াও করেছিল কেরল পুলিশ। গত বছর ডিসেম্বরে সে মামলাটি হাতে নেয় এনআইএ। এখনও পর্যন্ত এই অভিযোগে এনআইএ মোট ৭৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ।

Advertisment

ধৃতরা হায়দরাবাদের আটজনের একটি দলের সদস্য বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এ দেশে আইএস হ্যান্ডলার হিসেবে কাজ করার অভিযোগে ওই দলের সদস্যদের আগে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনআইএ। হায়দরাবাদের ৭টি জায়গায় এনআইএ তল্লাশি চালিয়েছিল, যে খবর চলতি মাসের ৯ তারিখে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয়। ওই তল্লাশিতে আটজনকে পাকড়াও করা হয় বলেও জানা গিয়েছে। বসিত ও কাদেরসহ আট সন্দেহভাজনের ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন আগেই বাজেয়াপ্ত করেছিল এনআইএ। বাজেয়াপ্ত সামগ্রী ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর।

আইএসের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দু’জনের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে এনআইএ-র আইজি অলোক মিত্তল বলেন, ‘‘আইএসের সঙ্গে যোগাযোগের কথা জেরায় স্বীকার করেছে ধৃতরা। এ দেশে আইএসের জাল বিস্তারের কথাও তারা জানিয়েছে। ’’এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিত হায়দারাবাদের হাফিজবাবা নগরের বাসিন্দা। আরেক ধৃত কাদের হায়দরাবাদের চন্দ্রয়ানগুট্টার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এনআইএ সূত্রে এও জানা গিয়েছে যে, ২০১৪ সালে হায়দরাবাদের চারজনের একটি দলের সঙ্গে বসিত বাংলাদেশ হয়ে সিরিয়া যাওয়ার ছক কষেছিল। মালদহে সীমান্ত পেরোনোর সময়ে তাকে পাকড়াও করা হয়। ওই সময়ে ধৃতদের হায়দরাবাদ পুলিশের তরফে কাউন্সেলিং করানো হয়, একইসঙ্গে সতর্ক করে তাদের অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে আবারও দেশ ছাড়ার চেষ্টা করে বসিত। তুতো ভাই সৈয়দ হুসাইনি ও সহযোগী মাজ হাসান ফারুকিকে সঙ্গে নিয়ে সিরিয়া যাওয়ার ফন্দি আঁটে বসিত। শ্রীনগর যাওয়ার পথে সেবার নাগপুর বিমানবন্দরে ধরা পড়ে তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের পরিকল্পনা ছিল শ্রীনগর হয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়ে, পরে সেখান থেকে আফগানিস্তান যাওয়ার। হায়দরাবাদ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর, গতবছরের ২২ ডিসেম্বর তাদের নামে নিম্ন আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে, সেই বিচারপ্রক্রিয়া এখনও চলছে।

সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, সম্ভবত আইএস নিয়োগকারী আদনান হাসান দামুদির সঙ্গে বসিতের যোগাযোগ রয়েছে। ২০১৪ সালে  দামুদি ও তার সহযোগীদের বাংলাদেশে পালাতে সাহায্যের জন্য বসিতকে দামুদি ৫৪ হাজার টাকা দেয়। এনআইএ আধিকারিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সাল থেকে দুবাইয়ে থাকাকালীন প্রায় এক ডজন ভারতীয়কে আইএসে নিয়োগ করা হয়েছে। তাতে সম্ভবত হাত রয়েছে দামুদির। এ দেশে আইএসের প্রধান নিয়োগকারী ইউসুফ আল হিন্দির সঙ্গের যোগাযোগ রয়েছে দামুদির। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ইউসুফ-আল-হিন্দি আসলে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের অপারেটর, যার নাম শফি আরমার।

আরও পড়ুন, গৌরী লঙ্কেশ হত্যাতদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য: বুদ্ধিজীবীদের খুন করতে ২২ জনকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ

গতবছরের জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘গ্লোবাল টেরোরিস্ট’-এর যে তালিকা প্রকাশ করেছিল, তাতে নাম ছিল আরমারের।  সেই সময়েই আমেরিকা আরমারের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০১৫ সালে কোবেনে লড়াই চালাতে গিয়ে আরমারের ভাই সুলতান আরমার নিহত হয় বলে আইএসের একটি ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা রয়েছে।

দামুদির বিচার চলছে। অন্যদিকে, তার দুই সহযোগী জম্মু-কাশ্মীরের আজহার আল ইসলাম ও মুম্বইয়ের ফারহান শেখকে দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছরের সশ্রম কারবাসের সাজা শুনিয়েছে আদালত। দামুদির সঙ্গে তার দুই সহযোগী ইতিমধ্যেই দুবাই থেকে নির্বাসিত।

NIA IS national news
Advertisment