ইসলামপুরের দাড়িভিট হাই স্কুল কান্ডের জেরে সাসপেন্ড করা হল প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষককে। শুক্রবার তাঁর বাড়িতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষা দপ্তরের সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক দুজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবারই প্রধান শিক্ষক ও সহ প্রধান শিক্ষককে ডেকে পাঠানো হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, কিন্তু তাঁদের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি কেউই। শেষ পর্যন্ত তাঁদের শো কজ ও সাসপেন্ড করা হয়। ঘটনার জেরে এর আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল স্কুল পরিদর্শককে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসে স্কুলে ব্যাপক হিংসার জেরে নিহত হন দুই প্রাক্তন ছাত্র। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। উত্তর দিনাজপুরের মহকুমা শহর ইসলামপুর থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে দাড়িভিট গ্রাম। সেখানকার কোএড উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা সব মিলিয়ে প্রায় দু’হাজার।সেই স্কুলেই উর্দু এবং সংস্কৃত শিক্ষকের যোগ দেওয়া নিয়েই শুরু হয় গণ্ডগোল, স্কুল ভাঙচুর এবং শেষে গুলিতে রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণ নামে দুই প্রাক্তন ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুতে তোলপাড় হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য।
আরও পড়ুন: সিবিআই তদন্তের দাবি তুলে এবিভিপি-র কর্মসূচিতে দাড়িভিটে নিহতের মা
স্কুলে ভাঙচুর চালায় বহিরাগতরা, বিক্ষোভ সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস থেকে রবার সেলও ব্যবহার করতে হয় পুলিশকে। সব মিলিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইসলামপুর। ঘটনার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে স্কুল। গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, যতক্ষণ পর্যন্ত রাজেশ এবং তাপসের মৃত্যুর কিনারা না হচ্ছে, ততক্ষণ স্কুল বন্ধই থাকবে। আরও দাবি ছিল, এই জোড়া মৃত্যুর তদন্ত একমাত্র সিবিআই করলেই তা মানবেন গ্রামের মানুষ।
প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি দাড়িভিট নিয়ে একাধিক কার্যক্রম ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, যতক্ষণ না স্কুলে নতুন পরিচালন সমিতি তৈরি হচ্ছে, ততদিন এসডিওকেই পরিচালনার সমস্ত ভার দেওয়া হল। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, কালিপুজো, ভাইফোঁটা ইত্যাদি কেটে গেলেই আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে স্কুলের পঠন পাঠন শুরু করে দেওয়া হবে। তিনি অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ করেন যে, তাঁদের সমস্ত সমস্যার সমাধান যেন আলোচনার মধ্যে দিয়েই সেরে নেন তাঁরা। কারণ এভাবে দিনের পর দিন স্কুল বন্ধ রাখার কারণে ক্ষতি হচ্ছে পড়ুয়াদের।