Advertisment

দাড়িভিটের ঘটনার ১৫ দিন পরও জ্ঞান হারাচ্ছেন তাপসের মা

এখনও ইসলামপুরে দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়ে গুলি কাণ্ডে নিহত দুই যুবকের মৃত্যু রহস্য ভেদ হয়নি। ছেলের মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়েছেন তাপস বর্মণের পরিবার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Daribhita cover 2

ছেলের কথা মনে পড়লে এভাবে বারে বারে মূর্ছা যাচ্ছেন তাপসের মা।

ঘটনার পেরিয়ে গিয়েছে ১৫ দিন। কিন্তু এখনও থমথমে ভাব কাটেনি ইসলামপুরে দাড়িভিট গ্রামে। বন্ধ রয়েছে দাড়িভিট হাইস্কুল। কবে স্কুলে পঠন-পাঠন শুরু হবে জানে না কেউই। এই গ্রামের যুবক তাপস বর্মণের গুলিতে মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চাই, এই দাবিতে অনড় মৃতের পরিবার ও গ্রামবাসীরা। এখনও তাঁর বাড়ির সামনে ভিড় করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামে এখনও ২০ সেপ্টেম্বরের স্কুলের ধুন্ধুমার কাণ্ডই আলোচনার বিষয়বস্তু। আর তাপসের মা ছেলের কথা মনে পড়লেই দফায় দফায় মূর্ছা যাচ্ছেন। তাঁকে সামলে যাচ্ছেন তাপসের বোন। তাঁরও কলেজ যাওয়া বন্ধ।

Advertisment

দাড়িভিট স্কুলের গেটের সামনে বাড়ি হওয়াটাই কাল হলো তাপসের। বাড়ির সামনেই তাপসদের মিষ্টির দোকান। ঘটনার দিন দোকানের পরিসর বাড়ানোর জন্য কাজ করছিলেন রাজমিস্ত্রি। ঝামেলার সময় দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন তাপস। অভিযোগ, তখনই গুলি এসে লাগে তাপসের গায়ে। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছেলে ছিলেন। তাঁর বাবা মিষ্টির দোকানের কাজে সহযোগিতা করতন।

Daribhita photo সারাক্ষণ মাকে আগলে রেখেছেন তাপসের বোন।

একেবারে স্কুলের সামনের বাড়ি। মিষ্টির দোকানের পাশাপাশি তিন বিঘে জমি রয়েছে তাঁদের। মিষ্টির দোকান চালানোর পাশাপাশি ইসলামপুর কলেজে পড়তেন তাপস। ছেলের কথা মনে পড়লেই মা মঞ্জু বর্মণের চোখ-মুখে খিঁচ ধরে কথা বন্ধ হয়ে আসছে। দফায় দফায় জ্ঞান হারাচ্ছেন। ফের চোখে-মুখে জল দিলে জ্ঞান ফিরছে। ঘোর থেকেই যাচ্ছে। এই ঘটনা রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ধরা গলাতেই তাপসের মা বললেন, "পরিবারের কারও চাকরির দরকার নেই। আমি চাই ছেলের খুনির শাস্তি হোক। সিবিআই তদন্ত হলেই সত্যি ঘটনা বেরিয়ে আসবে। আমি মা, কি করে মিথ্যে কথা বলব? পুলিশের গাড়ির ভিতর থেকেই গুলি চলেছে। অন্য কেউ গুলি চালায়নি।" তাপসের বাবা বাদল বর্মণ দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে সংযত করে রেখেছেন সারাক্ষণ। "যতক্ষণ না ছেলের খুনিদের শাস্তি হচ্ছে ততক্ষণ শান্তি পাব না," বললেন বাদলবাবু। "যে ভাবে হোক, সিবিআই তদন্ত করতেই হবে। সিআইডি তদন্তের ওপর আমাদের কোনও ভরসা নেই।" ইতিমধ্যে দিল্লি গিয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছেও দরবার করে এসেছেন বাদলবাবু। গিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছেও। দিল্লিতে গিয়েও তাঁর একই দাবি, সিবিআই তদন্তের।

মঞ্জু দেবীর কথায়, "স্কুলে গন্ডগোল চলছিল। কিন্তু তাপস সেই ঝাগড়ায় যায়নি সেদিন। বাড়ির সামনে স্কুল, তাই দাঁড়িয়ে ছিল। গুলির শব্দ শুনে ছুটে যেতেই দেখি ছেলে লুটিয়ে পড়েছে।" বলতে বলতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন আবার। বাড়ির বাইরে উঠোনে বেঞ্চেই শুয়ে পড়লেন।

তাপসের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ও হামলা হয়েছে রাস্তায়। অমলঝাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা মারধর করেছে। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে আটকে থাকতে হয়। বাস্তবিক, রাস্তায় দাঁড় করিয়ে এই হামলার অভিযোগ করেছেন নিহত ও আহতদের প্রতিটি পরিবার।

students
Advertisment