ইজরায়েলি সেনাবাহিনী রবিবার ঘোষণা করেছে যে তারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনুস থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করেছে। ইজরায়েল খান ইউনূসে হামাস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান শেষ করেছে এবং সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে।
Advertisment
এরপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক চাপ নাকি ইরানের হামলার ভয়, কেন দক্ষিণ গাজা থেকে ইজরায়েলি সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে? এটি সেই একই এলাকা যেখানে ইজরাইল সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছিল। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে খুব বেশি তথ্য সামনে আনে নি।
ইজরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণে রাফাহ শহরে তাদের পরিকল্পিত অভিযান স্থগিত করেছে কিনা তা পরিষ্কার নয়। তবে ইজরায়েলি নেতারা বারবার বলেছেন, হামাসকে নির্মূল করতে রাফাহ শহরে হামলা জরুরি। রাফাকে হামাসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইসরায়েল সন্দেহ করে যে রাফাতে বিপুল সংখ্যক ইজরায়েলি বন্দীকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
দক্ষিণ গাজা থেকে ঞ্জরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে যখন মিশর একটি যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি মুক্তি চুক্তিতে নতুন আলোচনার আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ৭ অক্টোবরের হামলার সময় ২৫০ জনেরও বেশি ইজরায়েলকে বন্দী করা হয়। হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে ইজরায়েলি আক্রমণে ৩৩,১০০ এরও বেশি প্ল্যালেস্তাইনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক চাপও এর অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। গাজায় হামলা বন্ধ করতে ইজরায়েলের উপর আন্তর্জাতিক চাপ চরমে। মাত্র কয়েকদিন আগে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদও ইসরায়েলকে গাজায় হামলা বন্ধ করতে বলে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। এ ছাড়া আমেরিকার মতো সমর্থক দেশও এখন ইজরায়েল থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে। এর বাইরে, এমনও সম্ভাবনা রয়েছে যে দক্ষিণ গাজায় ইজরায়েলি সামরিক অভিযান শেষ হয়ে গেছে এবং এখন কেবল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানের মতো পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার কারণে ইজরায়েল হয়তো তাদের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। এই হামলায় ইরানের শীর্ষ জেনারেলসহ বহু কূটনীতিক নিহত হয়েছেন। জবাবে ইরান ইজরায়েলে হামলার হুমকি দিয়েছে। ইজরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও জানিয়েছে, ইরান দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের মাধ্যমে হামলা চালাতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, ইরানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইজরাইল সেনাদের প্রস্তুত করছে।