ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ: আট দিন আগে, ওরি নাচমানি এবং তার স্ত্রী জাপানে ছুটিতে ছিলেন যখন তাঁরা জানতে পারেন প্যালেস্তাইন জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস ইজরায়েলে অনুপ্রবেশ করেছে এবং বেশিরভাগ নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে বড় আকারের হত্যালীলা চালিয়েছে।
সেই থেকে চোখের পাতা এক করতে পারেনি তাঁরা। হাড় কাঁপানো যুদ্ধ এবং অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে, বছর-৪৪-এর ওরি জানিয়েছেন, যে তার প্রথম লক্ষ্য ছিল দেশে ফিরে আসা এবং হামলার বদলায় কঠিন পরিস্থিতিতে দেশের পাশে থাকা। বাহিনীর সঙ্গে হামলার বদলায় অংশ নেওয়া। তিনি জানিয়েছেন, “যখন আমি ছবিগুলো দেখেছিলাম এবং হামলার খবর শুনেছিলাম, তখন আমি সারারাত ঘুমাতে পারিনি। যদিও আমি হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে ছিলাম। আমি হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশের সঙ্গে অংশ নিতে চেয়েছিলাম ,”।
তাদের দেশে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনার মধ্যে নাচমানি, সময় নষ্ট না করে, খাবার, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে লোকেদের সংগঠিত করতে শুরু করেছিলেন। এক সপ্তাহ পরে তিনি দেশে ফেরেন। দেশে ফিরেই যুদ্ধে অংশ নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি।
টেক স্টার্টআপের একজন প্রতিষ্ঠাতা, যিনি পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি, তিনি তার সঙ্গীর সঙ্গে ব্রাজিলে ছুটি কাটাচ্ছিলেন যখন তিনিও আক্রমণের কয়েকদিন পর তার ইউনিট থেকে একটি কল পেয়েছিলেন। তারা তেল আবিবের উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং রবিবার সকালে অবতরণ করেন। নোয়া, একজন মনোবিজ্ঞানী, সেনাবাহিনীকে সাহায্যের জন্য রবিবার তেল আবিব ফিরে আসেন। তিনি বলেন, "এই সময় সকলকে দেশের প্রয়োজন এবং সংকটের এই সময়ে আমাদের সকলকে একত্রিত করা দরকার, তাই আমি ফিরে এসেছি," । অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের একটি দল, ইজরায়েলি পতাকা নেড়ে, তালি দিয়ে গান গেয়ে রবিবার স্বদেশে প্রত্যাবর্তনকে সেলিব্রেট করেছে। সেই দলে বছর ১৬-এর এক কিশোর জানিয়েছে, "তারা যুদ্ধে সাহায্য করতে ফিরে এসেছে, তাই আমরা তাদের উত্সাহিত করতে এবং তাদের প্রশংসা করতে এখানে এসেছি।"
গত এক সপ্তাহ ধরে, IDF স্বেচ্ছাসেবক এবং সংরক্ষকদের তাদের ইউনিটে যোগ দিতে এবং যুদ্ধের প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে বলেছে। গত রবিবার থেকে প্রায় প্রতিদিনই ইজরায়েলিরা, দেশে ফিরছে। আইডিএফ যখন ৩.৫ লাখেরও বেশি ইজরায়েলি জনগণকে যুদ্ধে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তখন অনেকেই উৎসাহের সঙ্গে দেশে ফিরে এসেছেন এবং যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন।
ইজরায়েলের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিওর হায়াত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, “গত শনিবার থেকে, সারা বিশ্বের অনেক ইজরায়েলি নাগরিক দেশে ফিরে এসেছেন। বিশ্বের নানান প্রান্তের আরও হাজার হাজার ইজরায়েলি দেশে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করছেন কঠিন সময়ে দেশের পাশে থাকার জন্য।” কর্মকর্তারা অনুমান করেছেন যে প্রায় দশ হাজারের বেশি মানুষ যুদ্ধে দেশের পাশে থাকতে দেশে ফিরে এসেছেন। লিওর জানিয়েছেন, 'নীতি নিয়ে আমাদের মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু এখন আমাদের সকলের একত্রিত হওয়া দরকার"।
গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশ। রবিবার, ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে তারা স্থল হামলা শুরু করার আগে গাজার জনগণকে দক্ষিণে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। ইতিমধ্যে ইরানও ইজরায়েলকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে।