২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হামলার ১৫তম বার্ষিকীর আগে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবাকে 'জঙ্গি তালিকাভুক্ত' করল ইজরায়েল। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আগেই ভারতের পাশে দাড়িয়েছিল ইজরায়েল। এবার লস্করকে নিষিদ্ধ করার কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে, কয়েকশো ভারতীয়কে হত্যা করেছে এই জঙ্গি সংগঠন। সেই কারণে ওই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হল। এই ঘোষণার পর নয়াদিল্লির ইজরায়েল দূতাবাস বলেছে, 'মুম্বই জঙ্গি হামলার ১৫তম বর্ষপূর্তিকে মাথায় রেখেই ইজরায়েল লস্কর-ই-তইবাকে জঙ্গি সংগঠনের তালিকাভুক্ত করল।' একইসঙ্গে, ইজরায়েলের দূতাবাস জানিয়েছে, 'ভারত সরকার এনিয়ে কোনও অনুরোধ করেনি। ইজরায়েল তারপরও আনুষ্ঠানিকভাবে লস্করকে জঙ্গি তালিকাভুক্ত করার সমস্ত প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। যার ফলে, লস্কর-ই-তইবার বিরুদ্ধে ইজরায়েলের যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে।'
এই ব্যাপারে ইজরায়েলের দূতাবাস আরও জানিয়েছে, 'যদিও ইজরায়েল কেবলমাত্র সেই জঙ্গি সংগঠনগুলোর তালিকা তৈরি করে, যারা তার সীমানার ভিতরে বা আশেপাশ থেকে সক্রিয়ভাবে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কাজ করে, অথবা যেগুলি বিশ্বব্যাপী ইউএনএসসি বা মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট দ্বারা জঙ্গি হিসেবে স্বীকৃত, সেই সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, কিন্তু ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা এবং বিদেশ দফতর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গ্লোবাল ফ্রন্টের গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে এই সময় লস্কর-ই-তইবাকে কালো তালিকাভুক্ত করল। কারণ, গ্লোবাল ফ্রন্ট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করছে।'
আরও পড়ুন- BGBS 2023: নেতাজি শরণে মুখ্যমন্ত্রী, জাপানের শিল্পপতিদের কাছে বোস পরিবার-তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতার দাবি
একইসঙ্গে ইজরায়েল জানিয়েছে, 'লস্কর-ই-তইবা একটি ভয়ংকর এবং নিন্দনীয় জঙ্গি সংগঠন। তারা, শত শত ভারতীয় নাগরিকের পাশাপাশি অন্য দেশের নাগরিকদেরও হত্যার জন্য দায়ী। ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর, এই সংগঠনের জঘন্য কাজকর্মের কুপ্রভাব এখনও সমস্ত শান্তিকামী জাতি ও সমাজের মধ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে।' ইজরায়েল একইসঙ্গে ভারতকে অনুরোধ করেছে যাতে ভারত জঙ্গি সংগঠন হামাসকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করে। ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়া হামাসকে নিষিদ্ধ করেছে।
ইজরায়েল তার বিবৃতিতে বলেছে, 'ইজরায়েল রাষ্ট্র সন্ত্রাসের শিকার সকলের প্রতি এবং মুম্বই হামলায় বেঁচে যাওয়া ও শোকাহত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছে। এই সব শোকাহত পরিবারগুলোর মধ্যে ইজরায়েলি পরিবারও আছে। আমরা একটি ভাল এবং শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের আশায় ঐক্যবদ্ধভাবে আপনাদের পাশে আছি।'
ইজরায়েলের সঙ্গে হামাসের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে গত ৭ অক্টোবর। ওই দিন গাজা থেকে হামাস ইজরায়েলের ওপর হামলা চালায়। অসংখ্য রকেট বর্ষণ করে। ইজরায়েলের হাজারের বেশি নাগরিককে হত্যা করে হামাস জঙ্গিরা। তারপরই গাজায় পালটা হামলা চালানো শুরু করে ইজরায়েল। ইতিমধ্যে সেই হামলার ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।