শনিবার ইজরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাস হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, 'আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি এবং জিতব।' ইজরায়েলি উদ্ধারকারী পরিষেবা বাহিনীও নিশ্চিত করেছে যে প্যালেস্তাইনি জঙ্গি সংগঠন হামাসের আক্রমণের পর ইজরায়েলে মৃতের সংখ্যা ১০০-এ পৌঁছেছে। আহত অন্তত ৭৪০ জন। পালটা, গাজায় ইজরায়েলের হামলায় অন্তত ১৯৮ জন প্যালেস্তিনীয় প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ১,৬১০ জন। এর আগে, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী ঘোষণা করেছিল যে তারা 'গাজায় হামাসের এলাকায়' হামলা চালাচ্ছে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়েভ গ্যালান্ট বলেন যে, 'হামাসের ছোড়া রকেটের জবাব দিচ্ছে ইজরায়েল। আর, এই যুদ্ধ ইজরায়েল জিতবে।'
প্যালেস্তাইনের যে জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে ইজরায়েল হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে, সেই হামাস শনিবার সকালে গাজা উপত্যকা থেকে এই হামলা শুরু করেছিল। হামাস দাবি করেছে যে তারা দক্ষিণ ইজরায়েলে ৫,০০০ রকেট নিক্ষেপ করেছে। যাকে 'বিস্ময়কর' ঘটনা হিসেবেই দেখছেন' সামরিক বাহিনীর বিশেষজ্ঞরা। প্যালেস্তাইনের জঙ্গি সংগঠনের দাবি কার্যত মেনে নিয়েছে ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীও। সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ২,৫০০ রকেটের গণনা করা সম্ভব হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের বাসিন্দাদের বাড়ির ভিতরে থাকতে বলা হয়েছে। জরুরি পরিষেবা এবং উদ্ধারকারী সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আলম রক্তদান অভিযান শুরু করেছে।
হামাসের হামলার জবাবে ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীর হামলার বিস্তারিত বিবরণ না-মিললেও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে ইসরায়েলের সীমান্ত শহর সেডরোটের ভিতরে উর্দিপরা বন্দুকধারীরা ঘোরাঘুরি করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিওগুলিতে গুলির শব্দও শোনা গিয়েছে। যার সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদ সংস্থা যাচাই করতে পারেনি। ম্যাগেন ডেভিড আলমের সূত্রে খবর, দক্ষিণ ইজরায়েলের একটি ভবনে রকেটের আঘাতে ৭০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধা গুরুতর আহত হয়েছেন। অন্য এক জায়গায় ২০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি রকেটের আঘাতে ভালোই আঘাত পেয়েছেন।
আরও পড়ুন- ভয়ঙ্কর যুদ্ধপরিস্থিতি, নির্দেশিকা জারি ভারতের
হামাসের এই রকেট বৃষ্টি কার্যত ঘটল পশ্চিম তীরে ভয়াবহ লড়াইয়ের মধ্যেই। পশ্চিম তীরে এবছর ইজরায়েলি সামরিক অভিযানে প্রায় ২০০ প্যালেস্তাইনি নিহত হয়েছেন। ইজরায়েল অবশ্য বলেছে যে ওই সব অভিযানগুলো জঙ্গিদের লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে। তবে, নিহতদের মধ্যে পাথর নিক্ষেপকারী বিক্ষোভকারীদের মত হিংসাত্মক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাও আছেন। ইজরায়েলি এলাকায় এর পালটা প্যালেস্তাইনি হামলায় ৩০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সেই উত্তেজনাই গাজাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে হামাসের লোকজন কয়েক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলের সীমান্তে হিংসাত্মক বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তারপর আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ওই সব বিক্ষোভ প্রদর্শন বন্ধ করানো হয়।