গাজায় যুদ্ধের আগুনে জল ঢালতে আরও আরও পণবন্দিদের মুক্তি দিল হামাস। রবিবার ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে যে ১৪ ইজরায়েলি পণবন্দি ও তিন জন বিদেশি নাগরিককে হামাস মুক্তি দিয়েছে। ওই পণবন্দিদের রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। রবিবার ইজরায়েলের কারাগার থেকেও বন্দি প্যালেস্তিনীয়দের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গত দু'দিন ধরেই হামাস পণবন্দি ইজরায়েলিদের মুক্তি দিচ্ছে। শর্ত মেনেই পালটা, বন্দি প্যালেস্তিনীয়দের মুক্তি দিচ্ছে ইজরায়েল। রবিবার জানা যায়, নতুন করে ১৩ পণবন্দিকে মুক্তি দেবে বলে হামাস কথা দিয়েছে। ইজরায়েল পালটা মুক্তি দিতে চলেছে ৩৯ প্যালেস্তিনীয়কে। বন্দিমুক্তির এই তালিকা ইতিমধ্যেই তাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে বলে মিশর দাবি করেছিল। তারপরই মিশরের দাবি সত্যি করে ১৪ ইজরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দিল হামাস। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে এই বন্দি বিনিময়। ইতিমধ্যে এর আগে দু'দফায় বন্দিদের মুক্তি দিয়েছে হামাস এবং ইজরায়েল। এবার তৃতীয় দফার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন মিশরের স্টেট ইনফরমেশন সার্ভিসের প্রধান দিয়া রাশওয়ান।
শুক্রবার গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলি এবং হামাস বাহিনীর মধ্যে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। গত ৪৮ দিনের ভয়ংকর যুদ্ধের পর এই প্রথম যুদ্ধবিরতি পালন করছে উভয়পক্ষ। এর আগে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার উত্তরাংশ। যদিও এখনও পর্যন্ত স্থায়ীভাবে যুদ্ধশেষে নারাজ হামাস এবং ইজরায়েল। অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হামাস কমপক্ষে ৫০ জন পণবন্দিকে মুক্তি দেবে। আর, ইজরায়েল মুক্তি দেবে ১৫০ প্যালেস্তিনীয়কে।
অস্থায়ী এই যুদ্ধ বন্ধের মেয়াদ থাকবে চার দিন। উভয় পক্ষের কাছেই নারী এবং শিশুরা বন্দি আছে। কাতার, মিশর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতা করে এই যুদ্ধবিরতি ঘটিয়েছে। শর্তসাপেক্ষে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি অতিরিক্ত ১০ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি একদিন করে বাড়ানো হবে বলে কথা হয়েছে। এমনটাই প্রস্তাব দিয়েছে ইজরায়েল।
আরও পড়ুন- রাজ্যগুলোকে জরুরি নির্দেশ কেন্দ্রের! চিনে নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব, করোনার মতই ভয়ংকর?
তেল আভিভের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামাসের জঙ্গিরা গত অক্টোবরের হামলায় ১,২০০ ইজরায়েলিকে হত্যা করেছিল। আর, প্রায় ২৪০ জনকে পণবন্দি করেছিল। তারপর থেকে, ইজরায়েল হামাস-শাসিত গাজায় লাগাতার বোমাবর্ষণ করেছে। যাতে প্রায় ১৪,০০০ গাজাবাসী প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে প্রায় ৪০% শিশু। এমনটাই দাবি করেছে প্যালেস্তাইনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।