ইতিহাস গড়ল ভারত। ইসরোর মুকুটে যোগ হল নয়া পলক। সবচেয়ে ভারী রকেটে একসঙ্গে ৩৬টি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল ইসরো। পাঁচটি ধাপে পাঁচ হাজার সাতশো ছিনানব্বই কেজি পেলোড নিয়ে একসঙ্গে ৩৬টি উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপনে দীপাবলির আগেই দেশজুড়ে উৎসবের মেজাজ।
ভারতীয় মহাকাশ গবষেণা সংস্থা ইসরোর তরফে রবিবার রাত ১.৪২ মিনিটে ঘোষণা করা হয়, ''LVM3 M2/OneWeb India-1 মিশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ৩৬টি উপগ্রহকে কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। একটি ট্র্যাকিং ব্ল্যাকআউটের পরে যার মধ্যে ২০টি উপগ্রহ স্থাপন করা হয়েছিল।'' অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় দেশের একমাত্র মহাকাশ বন্দরের দ্বিতীয় লঞ্চ প্যাড থেকে এই উপগ্রহগুলি উৎক্ষেপনের প্রায় ৩৭ মিনিট পরে, ইসরো চেয়ারপার্সন এস সোমানাথ বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ১৬ (স্যাটেলাইট) খুব নিরাপদে আলাদা করা হয়েছে। বাকি ২০টি স্যাটেলাইটও আলাদা হয়ে যাবে। আমরা এই জায়গা থেকে এটি দেখতে পাব না (রকেটটি পৃথিবীর অন্য দিকে থাকবে) এবং ডেটা একটু পরে আসবে।" ইসরো চেয়ারপার্সন, সবাইকে শুভ দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ''মহাকাশ সংস্থা একটু আগে থেকেই দীপাবলি উদযাপন শুরু করেছে।''
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো এর আগেও একাধিকবার মহাকাশ অভিযানে সামিল হয়েছে। স্যাটেলাইটও উৎক্ষেপন করেছে। এতদিন হলকা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করেছে ভারত। তবে এবার সবচেয়ে ভারী রকেটে স্যাটেলাইট পাঠিয়ে আত্মনির্ভর ভারতের পথে আরও একধাপ এগোন গেল। এটি ছিল LVM3-এর প্রথম অভিযান। প্রকৃতপক্ষে ইসরোর ওয়ার্কহরস পিএসএলভি ছাড়া এবার অন্য উৎক্ষেপন যানে বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশ পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে সফলতা এল।
এই মিশনের ফলে বাণিজ্যিক মহাকাশ সেক্টরের একটি বৃহত্তর অংশ দখল করার জন্য ভারতও ছাপ রাখল। বর্তমানে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী দেশ হওয়া সত্ত্বেও এই ক্ষেত্রের মাত্র ২ শতাংশ জায়গা ভারতের দখলে আছে।
তবে এবারের এই মিশন গোটা বিশ্বে ভারতকে অনন্য সম্মান এনে দিল। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো আবারও বহির্বিশ্বের কাছে নিজেদের ক্ষমতা চেনাতে সফল। পশ্চিমী দেশগুলির উপর নির্ভরতা কমিয়ে ভারতকে প্রকৃতপক্ষে আত্মনির্ভর করে তুলতে ইসরোর এই পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।