ইসরো চেয়ারপার্সন এস সোমনাথ বুধবার চন্দ্রযান-৩ চাঁদে অবতরণ অভিযানে জড়িত বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন যে প্রকল্পের সাফল্য শুক্র এবং মঙ্গল গ্রহে অবতরণ সহ দুঃসাহসিক মহাকাশ অভিযানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে দিল। চন্দ্রপৃষ্ঠে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার মডিউলের সফল নিরাপদ ও আলতোভাবে অবতরণের পরে বেঙ্গালুরুতে মিশন অপারেশন কমপ্লেক্সে ইসরো দলকে সম্বোধন করে সোমানাথ বলেছেন, এই সাফল্য হাজার হাজার বিজ্ঞানীর চেষ্টার ফল।
Advertisment
অভিযানের কঠিন দিকগুলো অবতরণের বেগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সেকেন্ডে ২ মিটারের চেয়ে কম। ল্যান্ডার সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করায় ভবিষ্যতের অভিযান নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। ল্যান্ডার এবং রোভারের যন্ত্রগুলোর পরবর্তী ১৪ দিনের পরীক্ষা বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হবে বলেই সোমনাথের বিশ্বাস। এই প্রকল্পের অসুবিধা ব্যাখ্যা করে, সোমনাথ বলেন যে সবচেয়ে কঠিন অংশগুলোর মধ্যে ছিল উৎক্ষেপণ, চাঁদের কক্ষপথে অবতরণ এবং ক্যাপচার, অবতরণের জন্য ল্যান্ডারের উৎক্ষেপণ এবং চূড়ান্ত অবতরণ।
Advertisment
পরপর অভিযান এই অভিযান সফল হওয়ায় ভারত প্রথম দেশ হিসেবে চন্দ্রের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণ করাল। আর, চাঁদে সফল অভিযান চালানো গেশগুলোর তালিকায় সামগ্রিকভাবে চতুর্থ স্থান অধিকার করল। ইসরোর পরবর্তী অভিযানগুলোর অন্যতম হল- গগনায়ন, লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন, আদিত্য এল-১, মঙ্গলায়ন ২, শুক্র মিশন।
মিশন গগনায়ন রাশিয়া-আমেরিকার মতো মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ভারত। ২০১৮-র ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ‘গগনায়ন’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিন ধাপে এই অভিযান কার্যকর হবে। প্রথম দুই ধাপে মানববিহীন মহাকাশযান যাবে। তার মধ্যে প্রথম ধাপে সাফল্য পেলে, দ্বিতীয় ধাপে মহাকাশযানে রোবট যাবে। রোবটের নাম ‘ব্যোম মিত্র’। শেষ ধাপে যেতে পারেন তিন মহাকাশচারী। ২০২৪-এর গোড়ায় এই অভিযান শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
মিশন লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন জাপানের সহযোগিতায় হতে চলেছে এই চন্দ্রাভিযান। জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি বা জাক্সা এবং ইসরোর মিলিত উদ্যোগে অভিযান হবে। এজন্য রোভার এবং ল্যান্ডার তৈরি হচ্ছে দুই দেশের সহযোগিতায়। নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির প্রযুক্তি এবং যন্ত্রাংশও ব্যবহৃত হবে। চাঁদে জলের খোঁজ, যান চলাচল এবং রাত্রিযাপন সম্ভব কি না, তা জানা এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
মিশন আদিত্য এল-১ চাঁদের পাশাপাশি, সূর্য নিয়েও গবেষণা করতে চায় ইসরো। এজন্য আদিত্য-এল ১ স্যাটেলাইট পাঠাবে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। যা সূর্যের ল্যাগরানগিয়ান পয়েন্ট-১ এর কাছে কক্ষপথে অবস্থান করবে। করোনার বাড়াবাড়িতে প্রকল্পটি পিছিয়ে যায়। তার আগেই ৩৭৮.৫৩ কোটি টাকা এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে।
মিশন মঙ্গলায়ন-২ ফের মঙ্গলে মহাকাশযান পাঠাতে চায় ইসরো। এবারের মহাকাশযানে হাইপারস্পেকট্রাল ক্যামেরা এবং র্যাডার থাকবে। অবশ্য, কবে অভিযানের কাজ শুরু হবে, তা এখনও অজানা।
মিশন শুক্র মঙ্গলের পর শুক্র গ্রহেও অভিযান চালাবে ইসরো। প্রকল্পের সম্ভাব্য নাম শুক্রযান। প্রাথমিকভাবে ২০২৪ সালে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ছিল। পরে, তা পিছিয়ে ২০৩১ সাল করা হয়েছে।